জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের পদত্যাগ দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও মাদক কারবারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আর্ট গ্যালারির সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘আমরা মনে করি লিটন তার জুলুম, নিপীড়ন, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দায়িত্বের অবহেলা করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছেন। আমরা এমন কলঙ্কিত নেতা ক্যাম্পাসে চাই না। আমাদের এক দফা এক দাবি- লিটনের পদত্যাগ।’
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেনিন মাহবুব, সহ-সভাপতি সাজ্জাদ শোয়েব চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার, অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল আলম তাকিদ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরাফাতুল ইসলাম বিজয়।
সংগঠনের কর্মীদের খোঁজখবর না রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জমি দখল, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, কর্মিসভা করেও দীর্ঘদিন ধরে হল কমিটি না দেয়া, নিজ হলকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা, নেতা-কর্মীরা দেখা করতে চাইলে ব্যস্ততার অজুহাত দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ২৩ জানুয়ারি লিটনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের ছয়টি হলের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার লিটনের পদত্যাগ দাবিতে কালো পতাকা মিছিল করে তারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে ২৭ জানুয়ারি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমার নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আকতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি এবং ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের এক বছর মেয়াদি আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নিয়ম থাকলেও ১১ মাস পর ৩৯০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। গত বছরের ৩ জানুয়ারি এই কমিটির মেয়াদ ফুরালেও নতুন কমিটি হয়নি। বর্তমানে কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ প্রায় ১৫০ জনেরই ছাত্রত্ব নেই বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।