জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মেধা-অবৈতনিক বৃত্তি দেবে জবি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিউজবাংলাকে শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, এ বছর বৃত্তির আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে নিজস্ব বিভাগে ফর্ম জমার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বৃত্তি নীতিমালা-২০১৩’ অনুযায়ী সকল বিভাগ হতে প্রতি শিক্ষাবর্ষে তিনজন শিক্ষার্থীকে মাসিক ৪০০ টাকা হারে মেধাবৃত্তি এবং একজন শিক্ষাবর্ষে বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান করা হবে। মেধাবৃত্তি ছাড়াও প্রতিটি বিভাগের সব শিক্ষাবর্ষের মধ্যে ১০ শতাংশ অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান করা হবে।”
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড প্রদত্ত বৃত্তি এবং সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা থেকে বৃত্তি প্রাপ্ত ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেমিস্টারে পুনরায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য অযোগ্য বলে গণ্য হবেন।
এর আগে ২০২৩ সালে এক হাজার ৬৭৬ জনকে মোট ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা মেধা-অবৈতনিক বৃত্তি দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির নীতিমালা অনুসারে, মেধাবৃত্তি প্রাপ্তির জন্য প্রতিটি বিভাগের প্রতি ব্যাচ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী তিনজনকে মনোনীত করা হবে। তবে ৩ দশমিক ৬০-এর নিচে সিজিপিএ থাকা যাবে না। অনেক বিভাগে নীতিমালার সমপরিমাণ সিজিপিএ না থাকায় উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতাবলে সর্বোচ্চ নম্বরধারী তিনজনকে বৃত্তি দেয়া হবে।
অন্যদিকে অবৈতনিক ক্যাটাগরিতে প্রতিটি বিভাগের প্রতি ব্যাচের ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে মনোনীত করা হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে বৃত্তিপ্রাপ্তরা এক বছরের দুই সেমিস্টার বিনা বেতনে অধ্যয়ন করবেন। এ বৃত্তিপ্রাপ্তির বিবেচ্য বিষয়াবলির মধ্যে বাবার বার্ষিক আয়, মায়ের বার্ষিক আয়, অভিভাবকের বার্ষিক আয় (বাবার অবর্তমানে), বাবার চাকরি বা পেশার বিবরণ, মায়ের চাকরি বা পেশার বিবরণ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাবা ও মায়ের মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য, সংশ্লিষ্ট ছাত্র-ছাত্রীর মেধা ও উপস্থিতি এবং আচরণ, পরিবারের সদস্য সংখ্যা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্র-ছাত্রীর কোনো ভাই-বোন অধ্যয়ন করে কি না এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবর্ষের কোর্স কোঅর্ডিনেটরের মতামত গুরুত্ব এবং অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য মেধাবৃত্তি ও অবৈতনিক বৃত্তি চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৫৫৩ শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান করা হয়। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এক হাজার ১১৬, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৯৩৯ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়।
এ ছাড়াও ২০২২ সালে এক হাজার ৯৩০ শিক্ষার্থীকে ৫০ লক্ষ টাকা ও ২০২৩ সালে এক হাজার ৬৭৬ জনকে মোট ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বৃত্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।