রাজধানীর প্রগতি সরণিতে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) নিজস্ব ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার’ সেন্টারের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বৃহস্পতিবার ‘ব্রিজিং বর্ডারস অ্যান্ড বিল্ডিং বন্ডস: দ্য ট্রান্সফর্মেটিভ পাওয়ার অফ ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার’ শিরোনামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও শিল্পোদ্যোক্তা ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক তার বক্তব্যে বলেন, ‘ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টারের মাধ্যমে দুই দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মানোন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, এমন আয়োজন দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।’
বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়নের এই যুগে এখন প্রয়োজন এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের যোগাযোগের মাধ্যম প্রসারিত করা।’
কোরিয়ায় বাংলাদেশের দক্ষ জনবলের চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ভাষাগত বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে একজন আরেকজনের সঙ্গে ভাব ও তথ্য বিনিময় করতে পারবেন। তাই ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রম করে এমন সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে।’
এই ‘ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার’ সেন্টার দুই দেশের মধ্যে আরও সুযোগ বৃদ্ধির পথ উন্মোচন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ধরনের বন্ধনের মাধ্যমে আগামীর প্রজন্মকে বিশ্ব সম্প্রীতিতে অনুপ্রাণিত করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিইউবির চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আজকের এই আয়োজন কোরিয়া এবং বাংলাদেশের ভাষাগত ও সংস্কৃতির একটি মেলবন্ধন স্থাপনের প্রয়াস। বিশ্বায়নের এই যুগে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। আর যোগাযোগ বলতেই প্রথমে আসবে ভাষার কথা। ভাষার বিনিময় মানেই সংস্কৃতির আদান-প্রদান। তাই কোরিয়ার সঙ্গে আজকের এই আয়োজন করতে পেরে আমি আনন্দিত এবং গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রম করে এমন সংযোগ বৃদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। আগামীর প্রজন্ম টিকে থাকার জন্য এবং বহির্বিশ্বে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এমন আয়োজন দারুণ ভূমিকা রাখবে। তাই কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি সব সময় যুগোপযোগী সব সিদ্ধান্ত নিয়েই কাজ করে থাকে। আমরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিই। স্কিল ডেপেলপমেন্টকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর) প্রফেসর ড. গিয়াস ইউ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামে অন্যদের মধ্যে কোরিয়ান দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক ডিপ্লোম্যাসির প্রধান ড. ইয়ংমিন সিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন, পিএইচডি এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সিনিয়র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো. রিদওয়ানুল হক বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা আন্তর্জাতিক ভাষা ও সংস্কৃতির আদান-প্রদানের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘ভাষা ছাড়া সংস্কৃতি টিকে থাকতে পারে না। ভাষা একটি দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আর এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে ভাষা হচ্ছে শক্তিশালী হাতিয়ার। তাই একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সংস্কৃতি-সম্পর্কের জন্য ভাষার কোনো বিকল্প নেই। ফলে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের আজকের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কেননা আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের উপস্থাপন করার জন্য একটি দেশ আরেকটি দেশের সঙ্গে ভাববিনিময় করতেই হবে। ফলে এর জন্য বিশ্বের ভাষাজ্ঞান বেশ গুরুত্বপূর্ণ।’
এমন একটি আয়োজনের জন্য আগত অতিথিরা কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।