রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকদফা পাল্টাপাল্টি হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। হলের ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার খেতে বসাকে কেন্দ্র ঘটনার সূত্রপাত।
এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কর্যনির্বাহী সদস্য সাকিবুল হাসান বাকিকে মারধর করে ক্যাম্পাসছাড়া করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ক্যান্টিনে। শুক্রবার দুপুরে ক্যান্টিনে খাওয়ার জন্য একটি সিটে বসেন জাহিদ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী। এর কিছুক্ষণ পর শান্ত নামে এক ছেলে এসে জাহিদকে উঠতে বলেন এবং তিনি ওই সিটে আগে বসেছিলেন বলে দাবি করেন। জাহিদ তাকে অন্য সিটে বসতে বললে তর্ক শুরু হয়। পরে জাহিদ তার বন্ধু রিফাতের কক্ষে অবস্থান নিলে শান্ত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে এসে কক্ষের দরজায় লাথি মারতে থাকে। বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আরও কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে তাদের দুজনকে মারধর করেন রাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা ও তার অনুসারীরা।
মারধরের শিকার জাহিদ ও রিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী। অপরদিকে শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের অনুসারী।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশে ভাস্কর সাহাকে মারধর করেন সাকিবুল ইসলাম বাকির অনুসারীরা। মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান বাকির অনুসারীরা।
পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরবর্তীতে বর্তমান কমিটির নেতা-কর্মীদের মতিহার হলে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে তারা হল ত্যাগ করেন। তবে মিটিংয়ে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন- সে বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছুই জানাননি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
এই ঘটনা শোনার আধঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে পরিবহন মার্কেটে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাকিবুল হাসান বাকি। এর কিছুক্ষণ পরই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা পরিবহনে অবস্থান নেন এবং বাকিকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এতে আহত হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ওই নেতা।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, ‘হলে আমার অনুসারীদের মারধর করা হয়েছে- এমন খবর শুনে আমি ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেটে আসি। এ সময় আমার সঙ্গে কয়েকজন ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমার ৮-১০ জন কর্মীসহ আমি আহত হই।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের দুই পক্ষকেই ডেকে বিষয়টি শুনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’