ছাত্রীনিবাসে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শিমু রানী তালুকদার নামে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক ছাত্রী।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী সব্বেজ টাওয়ারে (ছাত্রীনিবাস) এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ৫ তলাবিশিষ্ট ছাত্রীনিবাসে অনেক ছাত্রী ভাড়া থাকেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিজেদের রুমে ডেকেন নেন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এসময় শিমু রানী তালুকদার নিজেকে অসুস্থ দাবি করে যেতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ছাত্রীনিবাসের ছাদে নিয়ে গেয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত বিভিন্নভাবে র্যাগিং করা হয়। এসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
র্যাগিংয়ের বর্ণনা দিয়ে নারাজ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিমু রানী তালুকদার বলেন, ‘আমার মতো এরকম ঘটনার শিকার যেন কেউ না হয়। আমার এই ঘটনা আমার পরিবার বা অন্য কেউ না জানুক, সেজন্য বলতে চাচ্ছি না। আমি সিনিয়র আপুদের অনেক নিষেধ করার পরও তারা আমার কথা শোনেননি। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন ওই ছাত্রীনিবাসের মালিক আবুল কালাম আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাতে ১০ জন জুনিয়র শিক্ষার্থীকে সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী ওপরে ডেকে নিয়েছিল। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকজন আসছিল। সে একটু অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল আর কি।’
এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরপরই আমি খোঁজখবর নিয়েছি এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা করেছে। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি না। এ বিষয়ে আমি প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমিও শুনেছি। ওই শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তা জেনে পরে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’