বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জবির সেই ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি

  • প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২২:৩০

ইউনুস মাতব্বরের আসল নাম আল-আমিন জয়। আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ইউনুস মাতব্বর নামে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ভর্তির কিছুদিন পর তিনি অস্ট্রেলিয়াতে চলে যান। সেই সুযোগে ‘আল-আমিন জয়’ নামের ওই যুবক ইউনুস মাতব্বরের নাম ব্যবহার করে একটি ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে ওই শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেয়া শুরু করেন।

নিউজবাংলায় সংবাদ প্রকাশের একদিন পরই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র না হয়েও ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে নেয়া ইউনুস মাতাব্বর নামের সেই ছাত্রলীগ নেতাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়ার বিষয়টি সোমবার নিউজবাংলায় ‘জবির শিক্ষার্থী না হয়েও নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর যাচাই-বাছাই করে এ সিদ্ধান্ত নেয় শাখা ছাত্রলীগ নেতারা।

মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে ইউনুস মাতাব্বরকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দেয়া ইউনুস মাতাব্বর মিথ্যা প্রত্যয়নপত্র ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পদায়িত হয়। বিষয়টি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নজরে আসার পর ঘটনার সত্যতা যাচাই করলে তার প্রতারণার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইন বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে ইউনুস মাতাব্বরকে অব্যাহতি দেয়া হলো।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নেয়া ইউনুস মাতাব্বরের কোনো অপকর্মের দায়ভার পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বহন করবে না। সেই সঙ্গে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউনুস মাতাব্বর নামের ওই যুবক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রই নন। আইন বিভাগের চলমান ব্যাচগুলোতে ইউনুস মাতাব্বর নামে কোনো শিক্ষার্থীর নাম নেই। বিভাগের নথিপত্রেও এই নামের কোনো শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় দেওয়া ব্যাচের সহপাঠীরাও তাকে ক্লাসে দেখেন না। কয়েকবার বিভাগের করিডোরে তাকে দেখা গেলেও ক্লাস-পরীক্ষাতেও ছিল না তার কোনো উপস্থিতি।

ইউনুস মাতব্বরের আসল নাম আল-আমিন জয়। আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ইউনুস মাতব্বর নামে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ভর্তির কিছুদিন পর তিনি অস্ট্রেলিয়াতে চলে যান। সেই সুযোগে ‘আল-আমিন জয়’ নামের ওই যুবক ইউনুস মাতব্বরের নাম ব্যবহার করে একটি ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে ওই শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেয়া শুরু করেন। এমনকি ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন, কিন্তু রাজনীতির জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন’ বলেও রটান ওই যুবক।

শুরুর দিকে জবির ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর বিভাগে তাকে দুয়েকদিন দেখা গেলেও পরবর্তীতে কখনও কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখেনি ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সে আইন বিভাগের পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করছে বলে অনেকেই জানান।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউনুস মাতাব্বরকে শুরুতে কয়েকবার ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বিষয়টি নিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান বলেন, ‘ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করে। আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না। সে যে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে, সেটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।’

তবে রবিউল ইসলাম রবিকে ফোন করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে এখন সমস্যাটি হচ্ছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ইউনুস যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নয়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করবে, সেটা কখনোই হতে পারে না।’

এ বিভাগের আরো খবর