রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় ফের অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
প্রতিষ্ঠানগুলোর শতাধিক শিক্ষার্থী রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন।
অবরোধের কারণে সায়েন্স ল্যাব থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত এলাকার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকের সড়কগুলোতে গাড়ি প্রবেশ করতে না দিয়ে যানগুলোকে ভিন্ন রাস্তায় ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
পরবর্তী বর্ষে ওঠার জন্য সিজিপিএর শর্ত শিথিল করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ তিন কোর্স পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ এবং পরবর্তী বর্ষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ চান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা কয়েক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করারও দাবি জানান।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
শিক্ষার্থীদের দাবি
সড়ক অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা নীলক্ষেত মোড় ছাড়বেন না। প্রয়োজনে তারা ‘গণ-আত্মহত্যা’ করবেন।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে আমি প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছি। এরপর এতদিনে দ্বিতীয় বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষাগুলোতেও অংশগ্রহণ করেছি, কিন্তু আট মাস পরে, অর্থাৎ কয়েক দিন আগে আমাদের প্রথম বর্ষের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। এতে আমি জানতে পারি, আমি দুই বিষয়ে ফেইল করেছি।
‘এখন কলেজের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী আমাকে আবার প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করতে হবে, কিন্তু আমাদের দাবি, ফেল যাওয়া সর্বোচ্চ তিন বিষয়ে মানোন্নয়নের সুযোগ দিয়ে পরবর্তী বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চাই।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আরেকটি দাবি হলো, পরবর্তী বর্ষে ওঠার জন্য সিজিপিএর যে শর্ত, সেটি শিথিল করতে হবে। বর্তমানে বর্ষ এবং বিভাগভেদে আমাদের একটি ন্যূনতম সিজিপিএ ধার্য করা আছে। সেটি বর্ষ এবং বিভাগভেদে টু পয়েন্ট থেকে টু পয়েন্ট ফাইভ জিরো পর্যন্ত।
‘এখন কেউ পাঁচ বিষয়ে ফেইল করার পরও যদি তার রেজাল্ট ধার্য করা সিজিপিএ পূরণ করতে পারে, তখন তাকে পাস দেখানো হচ্ছে। আর কেউ সব বিষয়ে পাস করেও যদি সিজিপিএর শর্ত পূরণ করতে না পারে, তখন তাকে দেখানো হচ্ছে ফেইল। এটা তো বৈষম্য। আমরা এই শর্ত আরও শিথিল চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত ন্যূনতম তিন বিষয়ে মানোন্নয়নের সুযোগ দিয়ে পরবর্তী বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয়াটাই আমাদের মূল দাবি। এটা করলে সিজিপিএ শর্ত শিথিল না করলেও চলবে।’
অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা ‘নয় মাসে রেজাল্ট কেন, জবাব চাই, জবাব চাই’, ‘যাব না, যাব না, নোটিশ ছাড়া যাব না’, ‘এক দফা এক দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘ঢাবি তোমার অনিয়ম, মানি না, মানব না’ ধরনের স্লোাগান দেন।
ওই সময় শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে ‘গণ-আত্মহত্যার’ জন্য কাপনের কাপড় কিনতেআন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে দেখা যায়।
কী বলছে পুলিশ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি-পেট্রল) মো. মাহবুব বলেন, ‘আমরা কলেজগুলোর শিক্ষককদের সঙ্গে কথা বলেছি। উনাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যান, মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।
‘এখন উনারা কী করে দেখি, তবে শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না করা পর্যন্ত আমাদের বল প্রয়োগের চিন্তা নেই।’