বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্রেপ্তার চার চিকিৎসকের পরিবারের প্রশ্নে যা বলল সিআইডি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২১ আগস্ট, ২০২৩ ২০:৪৬

সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুলনায় ওই চার চিকিৎসক থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খান তারিমের ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে মেডিক্যালে ভর্তি হন। তাদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রের হোতা তারিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খুলনায় সিআইডি পরিচয়ে শুক্রবার তিন নারী চিকিৎসকসহ চার চিকিৎসককে বাড়ি থেকে ধরে নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির চলমান অভিযানে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই চারজনসহ মোট পাঁচ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

এই পাঁচজনের মধ্যে চার চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা মণ্ডল, নাজিয়া মেহজাবিন তিশা, মুসতাহিন হাসান লামিয়া ও লুইস সৌরভ সরকারের পরিবার সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে। খুলনা বিএমএ ভবনে দুপুর আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে কী কারণে সিআইডি ওই চার চিকিৎসককে ধরে নিয়ে গেছে সেই প্রশ্ন তোলেন স্বজনরা।

সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিউজবাংলাকে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘ওই চারজনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খান তারিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদেরকে আজ (সোমবার) আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারিম থ্রি ডক্টরস মেডিক‍্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টারের মালিক।

আজাদ রহমান বিকেল ৬টা ১৭ মিনিটে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারিম খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। খুলনা শহরের আলোচিত মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস-এর মালিক। ডাক্তারি পেশা বাদ দিয়ে তিনি জড়ান কোচিং ব্যবসায়। প্রতিষ্ঠা করেন থ্রি ডক্টরস কোচিং খুলনা।

‘তারিম নিজেকে ডাক্তার তৈরির কারিগর হিসেবে পরিচয় দেন। মেডিক্যাল প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে শত শত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁসের গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য শত শত শিক্ষার্থীকে এভাবে ভর্তি করিয়ে কামিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার এবং তার স্ত্রীর একাউন্টে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, জমি, মাছের ঘের, হোটেলের শেয়ারসহ গড়েছেন বিপুল সম্পদ। একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এর আগেও তারিমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে।

বাকি চারজনের অপরাধ

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, ‘লুইস সৌরভ খুলনা মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস-এর শিক্ষক। বর্তমানে একটি বেসরকারি এনজিওতে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

‘ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন করেন। তিনি খুলনা থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক তারিমের স্পেশাল ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাকে বাসায়ও পড়াতেন তারিম। কম মেধাবী হওয়ার পরও তারিমের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে তিনি মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছেন। তারিমের ঘনিষ্ঠজন ও তৎকালীন কোচিংয়ের তিন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় মেধায় ১১ তম হওয়ার পরও লামিয়া ৪টি ফাইনাল প্রফেশনাল এক্সামিনেশনের সব সাবজেক্টেই ফেল করেছেন। পরবর্তীতে একাধিকবারের চেষ্টায় তিনি পাস করেন।

‘ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন আগেভাগে পেয়ে লামিয়ার মেডিক্যালে চান্স পাওয়ার বিষয়টি খুলনার চিকিৎসক মহলে ওপেন সিক্রেট। লামিয়ার ভর্তির জন্য তার স্বামী শেখ ওসমান গনি ও তারিমের মাঝে প্রায় ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্য দুজন ডা. শর্মিষ্ঠা মণ্ডল ও নাজিয়া মেহজাবিন তিশা ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ডা. তারিমের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র কিনে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।’

গ্রেপ্তারকৃতদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৎসহ পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে মিরপুর মডেল থানার মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ১৩ আগস্ট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজন চিকিৎসকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার টিম। তাদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দেয়া বিপুলসংখ্যক ব্যাংকের চেক এবং অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়, যেখানে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের অন্য সদস্যদের নাম পাওয়া যায়।

এ বিভাগের আরো খবর