লেখাপড়া শেষের পরও হলে থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে মোজাহিদুল ইসলাম রিশাদ ওরফে রিশাদ ঠাকুর নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার শাবি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়- বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকারে পরিণত করার অভিযোগে হল কর্তৃপক্ষের সুপারিশের ভিত্তিতে মো. রিশাদ ঠাকুরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। তিনি আর কখনও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিশাদ ঠাকুর ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষে তিনি মাস্টার্সে ভর্তি হননি। তারপরও তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করতেন। শিক্ষার্থীদের মারধর, নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বিকেলে নুর মো. বায়েজীদ নামে এক ছাত্রকে হলে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠে রিশাদের বিরুদ্ধে। প্রাধ্যক্ষকে দেয়া শাবি’র গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বায়েজিদের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়েজীদকে নিজের কক্ষে (৫০১৬ নম্বর) ডেকে নেন রিশাদ। সেখানে তাকে গালাগালি, মারধর ও মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি।
বায়েজীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতা রিশাদকে না জানিয়ে গ্রুপের অন্য সহপাঠীদের নিয়ে পৃথক মিটিং করায় তাকে মারধর করা হয়েছে। পরে তিনি সিলেট এমএজি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বায়েজিদকে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে গিয়ে রিশাদ লোকপ্রশাসন বিভাগের মারুফ নামের এক ছাত্রকে গলাটিপে ধরেন। এ ঘটনায় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় রাতেই প্রক্টরিয়াল বডি হল প্রাধ্যক্ষের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু হলে রিশাদের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালায়। সেখান থেকে মদের কয়েকটি খালি বোতল জব্দ করা হয়।
এর আগে বুধবার ছাত্র সংগঠনটির অন্য গ্রুপের নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রকে নির্যাতন করে হলছাড়া করার অভিযোগ ওঠে।
এ ব্যাপারে রিশাদ ঠাকুরের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিককবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।