জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের একাংশ।
‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান তারা। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৮১ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্বাক্ষর করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “যে ভিসি ছাত্র মারে, সেই ভিসি চাই না’ কিংবা ‘যে ভিসি প্রতারক, সেই ভিসি চাই না’ প্রভৃতি স্লোগানে ছাত্র আন্দোলনের মুখে যে উপাচার্য প্রায় এক যুগ আগে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই শরীফ এনামুল কবিরকে আজ ‘ইমেরিটাস অধ্যাপক’ পদে সম্মানিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এই দুরভিসন্ধিমূলক পাঁয়তারা দেখে আমরা বিস্মিত, লজ্জিত ও আহত বোধ করছি।
“ইমেরিটাস অধ্যাপক’ শব্দদ্বয় শুনলেই মনে চিন্তাশীল ও রুচিশীল মানুষের চেহারা ভেসে ওঠে। যেমন- অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক অথবা অধ্যাপক নাজমা চৌধুরীর মতো ব্যক্তি। তারা নিজস্ব কর্মক্ষেত্র, শিক্ষকতা ও গবেষণায় রেখেছেন অসামান্য অবদান। শিক্ষক হিসেবে তারা সর্বজনশ্রদ্ধেয়। শুধু তা-ই নয়, জাতি-রাষ্ট্রের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে তাদের অবদান এ জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গেই স্মরণ করে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় ‘ইমেরিটাস অধ্যাপক’ হিসেবে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারিগর হিসেবে পরিচিত সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে এমন একটি অত্যন্ত সম্মানজনক পদে নিয়োগের সুপারিশ করার অনৈতিক, হঠকারী ও লেজুড়বৃত্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এর আগে, ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে পদত্যাগকারী উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক বানানোর অপচেষ্টার অভিযোগে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও উপাচার্য ভবন অবরোধ করেন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তৎকালীন উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগে বাধ্য হন।