গবেষণা প্রবন্ধ জালিয়াতির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদের অপসারণের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
অপসারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেয়।
আদালতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও তানজীব উল আলম। শিক্ষকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহদীন মালিক ও এম মঞ্জুর আলম।
প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন শিক্ষক নাসির উদ্দিন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালে রুল জারি করে হাইকোর্ট। দীর্ঘদিন সেই রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে আদালত।
আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিনকে অবৈধভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমেএক অপসারণের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। সেই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) আদালত নাসির উদ্দিনের অপসারণ আদেশ বাতিল ঘোষণা করে।
শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি অধ্যাপক পদের জন্য আবেদন করেছিলাম। সেখানে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আরেকজন আমার নামে কপি আর্টিকেল সাবমিট করে। আমি সেসব কাগজপত্রও দেখিয়েছিলাম৷
‘সাবেক উপাচার্য মিজানুর রহমান নিজের ইচ্ছেমতো তদন্ত কমিটি করে নিজের ইচ্ছেমতো তদন্ত রিপোর্ট বানিয়ে আমাকে অবৈধভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করেছিলেন। সেজন্য আমি হাইকোর্টে রিট করি। হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সেই অপসারণ আদেশ বাতিল করেছে।
‘আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমি দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চাই। আমাকে ছাত্রছাত্রীদের থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। আমি তাদের মাঝে ফিরতে চাই।’
হাইকোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। আমি সে বিষয়ে জানি না। এখন তারা যদি এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে, তাহলে আমিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যাবো।’