চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন ও সাংগঠনিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ। পরে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন অবরোধকারীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন চবি ছাত্রলীগের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন বিজয় এবং ভিএক্স গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
বিজয় গ্রুপটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ভিএক্স গ্রুপটি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরর উদ্দিনের অনুসারী।
বিক্ষোভের সময় বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
এসময় কয়েকজন নেতা জানান, এক বছর মেয়াদের চবি ছাত্রলীগের কমিটির চার বছর হয়েছে, তাই এ কমিটি এখন অবৈধ। দীর্ঘদিন এ কমিটি থাকায় চবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক গতিশীলতা কমে গেছে। তারা বর্তমান কমিটির বিলুপ্তি চান।
ভিএক্স গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, ‘শোকের মাসে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেছে। অথচ, বর্তমান ভঙ্গুর কমিটি তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। কমিটির মেয়াদ চার বছর হওয়ায় বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে একটি অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি অবৈধ। আমাদের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এই অবরোধের ডাক দিয়েছে।’
বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকার পরও সাংগঠনিক কোনো গতিশীলতা নেই। প্রত্যেক গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে জাতীয় কর্মসূচিগুলো পালন করে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থাকলেও তাদের কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। আগামীকাল ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা হওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে আমরা চবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে দেখতে চাই না।’
আন্দোলন স্থগিতের ব্যাপারে বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের আশ্বাসে আমরা আমাদের অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেছেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদারকে একধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই এক বছরের জন্য চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এর তিন বছর পর ২০২২ সালের ৩১ জুলাই চবি ছাত্রলীগের ৩৭৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ কমিটির পর থেকেই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে আক্ষেপ দেখা দেয়।বর্ধিত ও নতুন কমিটির জন্য এর আগে বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফা আন্দোলনও করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।