কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানকে মারধরের অভিযোগ করে সোহেল মাহমুদ নামের ব্যাংক কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছেন উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক এবং কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বৃহস্পতিবার সকালে আল হাদিস ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ব্যানারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এর আগে বুধবার সকালে কুষ্টিয়া হাউজিং ডি ব্লক আবাসিক এলাকায় হাঁটতে বের হওয়ার সময় প্রতিবেশী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
ওই শিক্ষকের অভিযোগ, সোহেল তাকে পরিবারসহ শহর ছাড়তে বলেন। তা না হলে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি দেন।
আহত অবস্থায় মোস্তাফিজকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী।
সোহেল মাহমুদ অগ্রণী ব্যাংকের কুষ্টিয়ার চৌড়হাস শাখার কর্মকর্তা। ইবি শিক্ষক ও তিনি কুষ্টিয়া হাউজিংয়ের ডি ব্লক এলাকায় থাকেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি ও রেজিস্ট্রার বরাবর আলাদা তিনটি অভিযোগ করেন ইবির শিক্ষক।
মারধরের অভিযোগের বিষয়ে ইবি শিক্ষক মোস্তাফিজ বলেন, ‘বাড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল সোহেল। সেদিন সকালে একা পেয়ে আমার ওপর হামলা চালায় সে।
‘আমার হাতের আঙুলের অবস্থা খুবই খারাপ। মুখে, গলায়ও আঘাত করা হয়েছে।বিষয়টি শিক্ষক সমিতি ও প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছি। তারা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবেন।’
অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার বিরোধ ছিল। তিনি আমার অফিসের ডিজিএমের কাছে আমার নামে নানা অভিযোগ করেছেন, কিন্তু আমি মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। তিনি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার ও সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক শাহেদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ওই শিক্ষক তাদের বিষয়টি জানিয়েছেন, তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।
ইবির শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, এর আগেও তিনিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষক কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ের ডি ব্লকে বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করলে বাধা দেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ। পরে তিনি কুষ্টিয়া পৌরসভায় অভিযোগ করলে সার্ভেয়ার এসে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন। কিন্তু এরপরে কাজ শুরু করলে আবারও ওই শিক্ষকদের হুমকি দিতে থাকেন তিনি। গত বছরের জুলাই মাসে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে সোহেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার অধ্যাপক।