বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জবিতে শিক্ষিকার সামনেই ছাত্রীকে ছাত্রলীগের নির্যাতন, ভিডিও ধারণ

  • প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১৭ মে, ২০২৩ ২১:১১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে হলে এমন ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনায় আমি শঙ্কিত। অভিযোগ পাওয়ার পর দু’পক্ষকে ডেকে বসে বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছি।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) একই কায়দায় এক ছাত্রীকে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণের ঘটনা ঘটেছে। এখানেও ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ। আর নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে আবাসিক শিক্ষিকার সামনেই।

অভিযোগ উঠেছে, জবি-র বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের ওই আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন একই হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। আর নির্যাতনের পুরো ঘটনাটির ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ১২ তলার ১২০৩ নম্বর কক্ষে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার হাফসা বিনতে নূর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র্রী।

অভিযুক্তরা হলেন- হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার, ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী। তারা সবাই প্রত্যক্ষভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

এ ঘটনার পর বুধবার হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, হলের নিজেদের কক্ষের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী হাফসা বিনতে নূরের সঙ্গে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেবেকা হলের অন্য কক্ষের আবাসিক ছাত্রীদের ওই কক্ষে নিয়ে আসেন। পরে তারা সম্মিলিতভাবে হাফসাকে ওই কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করেন। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের শিকার হয়ে এক পর্যায়ে হাফসা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আবাসিক ছাত্রী বলেন, ‘পাশের রুমেই আমি থাকি। আমি এসে হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনীসহ সবাই তাকে ঘিরে রাখে; যাতে সে বের হতে না পারে। এক পর্যায়ে সে মোবাইল ফোন নিতে গেলেও তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাফসা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রুমমেট রেবেকা খাতুনের সঙ্গে রুম পরিষ্কার করা নিয়ে আমার কথা কাটাকাটি হয়। পরে সে হলের অন্য রুমের ৭ থেকে ৮ জন মেয়েকে নিয়ে আমাদের রুমে এসে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তারা সবাই মিলে রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমার ওপর নিপীড়ন চালায়।

‘এ সময় নিনজা শিকদার নামের এক মেয়ে মোবাইল ফোন সেটে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। আমাদের সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগম রুমে আসার পরও তারা থামেনি। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।’

শুধু তিনি নন, রুমের অন্য ছাত্রীরাও রেবেকার হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জানান হাফসা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সঙ্গে নিয়ে ওদের রুমে যাই। আমি গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এক পর্যায়ে আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি। আমি চলে আসার পর নাকি হাফসা আপু আমাদের ছাত্রলীগের মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে।’

ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত হলের সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগম বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত হয়। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। আমি যাওয়ার পরও তারা আক্রমণাত্মক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে দিচ্ছিল না। এমনকি ওর মোবাইল ফোনটাও ধরতে দেয়নি।

‘মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারণেই ঘটনাটি এতদূর গড়িয়েছে। আমি সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। তারপরও ওরা আমার সামনে বসে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে।’

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে হলে এমন ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনায় আমি শঙ্কিত। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।

‘এরপর থেকে যদি কেউ এমন কাজে জড়ায়, তাহলে তাদের সিট বাতিল করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর