জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় রোববার এই আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়, ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না।
রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান সভার সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল একই অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালকের পদ থেকে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে সে সময় অধ্যাপক ইমতিয়াজ দাবি করেন, তার নিজ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিন্ডিকেট সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত একটি বইয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদ্ঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ উত্থাপন করা হয়।
সভা মনে করে, গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত কতিপয় তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি। সভায়, উল্লেখিত গ্রন্থে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রন্থের লেখক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং প্রকাশক ইউপিএলকে গ্রন্থটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননাকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অধ্যাপক আমানুল্লাহকে ক্ষমা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহর ফেসবুক পেজে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ‘মনগড়া ও ভিত্তিহীন’ পোস্ট-এর বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের একটি প্রতিবেদন সভায় উত্থাপন করা হয়।
সভা মনে করে, এটি পাঠ্যপুস্তক, সরকারের শিক্ষানীতি ও ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করার একটি অপপ্রয়াস। অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ ইতোমধ্যে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা দেয়ার শর্তে তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন সভায় মঞ্জুর করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা সচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ ও উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।