ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) বার্ষিক ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) এই আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক সমিতির এবারের আলোচনা বিষয়বস্তু ছিল, বৈশ্বিক পরিবর্তন এবং উচ্চশিক্ষার ধারা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। এই বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য ড. এম তারিক আহসান।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তুষার সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা, সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।
এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, ছাত্রলীগ,ছাত্রদল, বামপন্থি ছাত্রসংগঠন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমি সাংবাদিক সমিতিকে তাদের এই ধরনের আয়োজনের জন্যে ধন্যবাদ জানাই। তারা প্রতিবছর সুন্দর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে এবং একই সঙ্গে সব ছাত্র সংগঠনকে একত্রিত করে। এই ধরনের পরিবেশ যদি সবসময় বিরাজ করে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ আরও অনেক সুন্দর হতো।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা রাজনীতি করবে, রাজনীতিমনষ্ক হবে। রাজনীতির চর্চা করবে। পাশাপাশি তাদের একাডেমিক জীবনও সুন্দর রাখবে। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করবে, এমন কার্যক্রমে যেন আমরা কেউই জড়িত না হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক এবং সাংস্কৃতি কর্যক্রমের অসাধারণ এক প্রাণকেন্দ্র। সেই কেন্দ্রকে আমরা প্রাণবন্ত রাখতে চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শুধু জলবায়ু বা পরিবেশ কেন, সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষার পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। সেই শিক্ষা পাকিস্তান আমলে আমাদের দেশে বৈষম্যমূলক ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কুদরত-এ খোদা শিক্ষা কমিশন করে একটা বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন এবং সেই সংগ্রাম এখনো চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ( প্রশাসন) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের বেশকিছু পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। আমরা শিক্ষক মূল্যায়ন নীতি চালু করেছি। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে আমরা ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। গবেষণার নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। সেই নীতিমালার আলোকে গবেষণা কর্ম সম্পাদন করা এরপর সেই গবেষণাকর্ম যেন ভালো জার্নালে প্রকাশিত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা রেখেছি।
তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি উচ্চশিক্ষার যে চ্যালেঞ্জ সেই চ্যালেঞ্জকে এড্রেস করার জন্য। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মধ্যে একটি পরিবর্তন নিয়ে আসতে চাচ্ছি। উচ্চশিক্ষাকে যদি আমরা প্র্যাক্টিকাল এবং ইমপেক্টফুল না করতে পারি তাহলে উচ্চশিক্ষা থেকে বেকার সৃষ্টি হবে। এই জন্য আমাদের সবার সহযোগিতা দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে ডুজার সভাপতি মামুন তুষার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষার্থে, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করছে। বর্তমান সমিতির সদস্যরাও পূর্বের ধারা অব্যহত রেখে, ক্যাম্পাসের সার্বিক স্বার্থকে বিবেচনা করে কাজ করে যাচ্ছে এবং এটার জন্যে সাংবাদিক সমিতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷