হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় নূরানী বোর্ডের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর দু’দিন আগেই কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দইব করে বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতের আমির মুফতি মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের জামিন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সুপারিশ করছি, কোর্ট সেগুলো যাচাই করছে। এক শ্রেণীর হয়ে গেছে, আশা করি বাকিদেরও হয়ে যাবে। ‘হেফাজতের পক্ষ থেকে আমাদেরকে কারাবন্দি নেতাদের একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী আমরা তাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করছি। অধিকাংশ নেতাকে ইতোমধ্যে মুক্তি দেয়া হয়েছে।’
সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সরকার কোনো নুরানি মাদ্রাসা বন্ধ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। এই সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী গড়ে তুলতে কাজ করছে। কওমি মাদ্রাসা একটি বোর্ডের আওতায় পরিচালিত হয়। সরকার এতে হস্তক্ষেপ করে না।’
হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক কেমন জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কারও বৈরী সম্পর্ক নেই। আমরা সুসম্পর্ক নিয়ে চলি। হেফাজত ইসলামি চিন্তা ও ইসলাম বিস্তারে কাজ করে। আমরা এদেশে ৯০ শতাংশ মুসলমান। কাজেই তাদের চিন্তাধারা ও তাদের কার্যকলাপ দ্বীন ইসলামের জন্য সহযোগিতা করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ‘আপনাদের সিলেবাস আপনারা করেছেন। আপনাদের সিলেবাসে সরকার কোনও হাত দেয়নি। আপনারা বেফাকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেন যে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কীভাবে চলবে। সেভাবেই হচ্ছে৷ আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করি না। তারপর হাইয়াতুল আউলিয়া, হাইয়াতুল আউলিয়া থেকে যা সিদ্ধান্ত নেন, সেখানেও আমরা হস্তক্ষেপ করি না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু বলি, আপনারা যে শিক্ষাটা দেন, যে সাবজেক্টটি পড়ান, আমাদেরকে জানান। আমরা যেন বলতে পারি, যারা দাওরায়ে হাদিস পাস করে আসছে, যারা কওমি মাদ্রাসা থেকে শিখে আসছে, তারা সব জ্ঞানী, তারা সব জানে। আমি অনেক মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে দেখেছি, যেভাবে তারা জ্ঞান অর্জন করে এসেছেন, আমি সব জায়গায় তাদের পারদর্শিতা দেখেছি।’
কওমি মাদ্রাসায় জঙ্গির উত্থান ঘটেনি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন জঙ্গিবাদের উত্থান হলো, তখন সবাই আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিত যে জঙ্গি এই মাদ্রাসা থেকে আসছে। আমরা তখন দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, কওমি মাদ্রাসা দ্বীনের শিক্ষা দেয়, ইসলামের শিক্ষা দেয়। এখানে কখনও জঙ্গির উত্থান হতে পারে না, এখানে জঙ্গির উত্থান হয় না। সেজন্য আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি, আমরা জঙ্গি দমন করেছি৷ আমাদের আলেম ওলামারা, মসজিদের মুয়াজ্জিন- সবাই আমাদের সহযোগিতা করেছিলেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন দুপুরে ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্রাসাও পরিদর্শন করেন।