কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মূল সড়ক অবরোধ করে হামলাকারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় টায়ারে আগুন জালিয়ে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
জানা যায়, সোমবার বিকেলে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দিয়ে ইবির দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল যুবকেরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও লাথি মারতে থাকে।
হামলার শিকার দুই শিক্ষার্থী দৌড়ে ক্যাম্পাস গেটে এলে অন্য শিক্ষার্থীরা তাদেরকে উদ্ধার করে ইবি মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে কুষ্টিয়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মেহেদি হাসান সুপ্ত ও জিসাদ।
আহত শিক্ষার্থীর বন্ধুদের সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মফিজ লেকে কিছু শিক্ষার্থী আড্ডা দেয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন বখাটে তাদের সঙ্গে থাকা বান্ধবীদের ভিডিও করে। এর প্রতিবাদে তারা ভিডিও ডিলিট করতে বললে উভয় পক্ষে তর্কাতর্কি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বখাটেরা তাদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীকে শেখপাড়া বাজারে পেয়ে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা বহিরাগত মুক্ত ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থী হামলার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ তিন দফা দাবি নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন। ক্যাম্পাসের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘ঘটনা শোনামাত্র ইবি থানার ওসি ও সহকারী প্রক্টরদের সেখানে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে আমি দুইজন সহকারী প্রক্টর নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার যারা আছেন তাদের নিয়ে বসেছি। আমাদের কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
‘তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করা, জনগণের জানমালের ক্ষতি, রাস্তা আটকে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করা সমর্থন করি না। আহতদের ক্যাম্পাসে চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইবি থানার ওসি আননূর জায়েদ বিপ্লব বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নজরে রাখছি। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। গেটে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।’
এদিকে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা রাত পৌনে ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে গেছেন।