শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শাহপরাণ হলের দুই শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থীকে হলে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়ে হল থেকে বের করে দেয়ার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শাস্তি পাওয়া তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বুধবার দুপুরে বলেন, ‘শাহপরাণ হলের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ২ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী একই ঘটনায় জড়িত থাকায় এবং হলের বৈধ শিক্ষার্থী না হওয়ায় তাকে হলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সাদ্দাম হোসেন পিয়াস ও সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের আশিকুর রহমান। পাশাপাশি একই ঘটনায় জড়িত থাকায় এবং আবাসিক শিক্ষার্থী না হওয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ইফতেখার আহমেদ রানাকে আবাসিক হলে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে শাহপরাণ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান বুধবার বিকেলে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও অফিসিয়াল চিঠি আসেনি।’
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের জেরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে দেলোয়ার হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে হুমকি দিয়ে বের করে দেয় সুমনের অনুসারীরা। দেলোয়ার হোসেন গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনিও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং সুমন মিয়ার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
হল থেকে বের দেয়ার ঘটনায় দেলোয়ার শাহপরাণ হলের প্রভোস্টের কাছে সোমবার লিখিত অভিযোগ দেন।
তাতে বলা হয়, ‘আমি শাহপরাণ হলের ২৩৯ নম্বর কক্ষের বৈধ শিক্ষার্থী। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে হলের সে কক্ষে সাদ্দাম কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসেন। এতে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে সমস্যা হলে আমি প্রতিবাদ জানাই।
‘এজন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বিছানাপত্রসহ আমাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। এ সময় সাদ্দামের নেতৃত্বে ইফতেকার, আশিকুরসহ প্রায় ১৫ জন মিলে আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন।‘
এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে দেলোয়ার নিরাপত্তা ও হলের আসন নিশ্চিতে সহায়তা কামনা করেন।
তবে হুমকির কথা অস্বীকার করে ছাত্রলীগ কর্মী সাদ্দাম হোসেন পিয়াস বলেন, ‘হুমকি দিয়ে নয়, দেলোয়ারকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে হল থেকে আপাতত বাইরে থাকার জন্য।’
হল থেকে বের করে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বেয়াদবি করায় দেলোয়ারকে আপাতত হল থেকে বাইরে থাকতে বলা হয়েছে।’