ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের পাশে স্থাপন করা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যে ভাস্কর্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তার ভাঙা মাথা উদ্ধার হয়ছে। তবে ভাস্কর্যটির বাকি অংশের সন্ধান মেলেনি এখনও।
চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার শুক্রবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতেই ছবির হাট গেইট ও টিএসসি গেইটের মাঝামাঝি সেন্ট্রাল লাইব্রেবির বিপরীত পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে এই ভাস্কর্যের মাথা পাওয়া গেছে। শুক্রবার গিয়ে আমরা এটি নিয়ে এসেছি। হলে এই ভাস্কর্যের মাথা সংরক্ষণ করা হবে।’
সম্প্রতি এই ভাস্কর্য স্থাপন করেছিল একদল শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার সকালে এটি সেখান থেকে সরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের এ পদক্ষেপের পর ভাস্কর্য রাখার স্থানে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’ নামে একটি ব্যানার টানিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয় রাজু ভাস্কর্যের পাশে। ভাস্কর্যে রবীন্দ্রনাথের মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ এবং তার হাতে একটি বই যেটি পেরেক মেরে বন্ধ করে রাখা।
মানুষের বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ভাস্কর্যটি এভাবে নির্মাণ করে সেখানে স্থাপন করা হয় বলে জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুক্তচিন্তা ও সৃজনশীলতার প্রতীক। মানুষকে কথা বলতে এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে ভাবতে বাধ্য করবে- এমন চিন্তা থেকেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু ভাস্কর্যটি রাজু ভাস্কর্যের পাশে স্থাপনের কয়েকদিনের মধ্যেই সেটি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি ক্ষোভ প্রকাশ করেছন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোক্তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, অনুমতি ছাড়া কোনো ভাস্কর্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা যাবে না। শিক্ষার্থীরা এভাবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য নির্মাণ করে তাকে অপমান করেছেন।
ভাস্কর্য নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা নাজিম উদ্দিন বিষয়ে বলেন, ‘কে বা কারা ভাস্কর্যটি সরিয়েছে আমরা জানি না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরও জানেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি না নিয়ে কারা কবিগুরু রবি ঠাকুরকে নিয়ে রসিকতা করার চেষ্টা করছে আমরা জানার চেষ্টা করছি। এটি রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করার একটি কৌশল। যারা এ কাজ করেছে তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। এটিকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’