বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অধ্যাপক নিয়োগ নিয়ে খুবির সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে ইউজিসি

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:৩৯

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস ইউজিসির এই তদন্ত কমিটির চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসির চিঠি হাতে পেয়েছি। তদন্তের জন্য তাদের সব রকমের সহায়তা করা হবে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়ম বর্হির্ভূতভাবে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে যাচ্ছে এ ঘটনায় গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কমিটি।

কমিটি হওয়ার দীর্ঘ ৮ মাস পর সম্প্রতি ইউজিসির পক্ষ থেকে সেখানে যেতে চাওয়ার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস ইউজিসির এই তদন্ত কমিটির চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসির চিঠি হাতে পেয়েছি। তদন্তের জন্য তাদের সব রকমের সহায়তা করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) ওয়ালিউল হাসানাত নামের একজন অধ্যাপকের নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে ইউজিসির চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়ে ওই শিক্ষককের নিয়মবর্হিভূত নিয়োগের ব্যাপারটি জানিয়ে তা তদন্ত করার অনুরোধ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ জুন ইউজিসি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তবে ৮ মাস ধরে ওই তদন্ত কমিটির সদস্যদের কোনো অগ্রগতি ছিল না। অবশেষে সেই তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করছে।

সম্প্রতি ইউজিসির ইন্সপেকশন ও মনিটরিং শাখা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে বিষয়টি তদন্তে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কমিটি এ দিন বেলা ১২টায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবেন।

পরিদর্শন শেষে কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভায় মিলিত হবেন। ওই দিন ও সময়ে দালিলিক প্রমাণাদিসহ অভিযোগপত্রে দেয়া বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ইউজিসি গঠিত ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বাসুদেব চন্দ্র ঘোষ। কমিটির বাকি দুজন সদস্য হচ্ছেন ইউজিসিরি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান ও ইউজিসির ইন্সপেকশন ও মনিটরিং শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. গোলাম দস্তগীর।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজ হাতে এসেছে নিউজবাংলার।

ওই কাগজ বিশ্লেষণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়ালিউল হাসনাত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্য সব যোগ্যতা ও শর্তের সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে কমপক্ষে চার বছরের বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু ওয়ালিউল হাসানাতকে সরাসরি অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়ার সময় তা মানা হয়নি।

তার নিজ হাতে লেখা অধ্যাপক পদের আবেদনপত্রে দেখা যায়, সহযোগী অধ্যাপক পদে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তিন বছর ছয় মাস সাত দিন। তিনি ১০ মাস ১৪ দিন লিয়েনে (শর্তসাপেক্ষে ছুটি) ছিলেন। ওই কার্যকালকে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে তাকে অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমনকি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনপত্র স্ক্রুটিনি (যাচাই-বাছাই) করা হয়নি।

ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ প্রক্রিয়াও হয়েছে খুব দ্রুততার সঙ্গে। ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওই ডিসিপ্লিনের একটি মাত্র অধ্যাপক পদের বিপরীতে নিয়োগ বোর্ড হয়। ৩১ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ১৮৯তম সভায় সেটি উপস্থাপন করে অনুমোদন করিয়ে নেয়া হয়। পরদিন ১ জানুয়ারি তিনি ডিসিপ্লিনে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনের পর সেটি রেজুলেশন করতে হয়। তারপর শিক্ষককে যোগদান করার জন্য চিঠি পাঠাতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তার কিছুই করা হয়নি। রেজুলেশন করার আগেই ওয়ালিউল হাসানাত রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিয়ে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে দুদক থেকে চিঠি পাঠিয়ে ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র চাওয়া হয়। ওই কাগজগুলো যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে কিছু অনিয়মের তথ্য দেখা যায়।

‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি অনুযায়ী লিয়েনে থাকা সময়কে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখানোর সুযোগ নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে তা দেখানো হয়েছিল। অন্যদিকে রেজুলেশন না করেই তাকে যোগদান করতে দেয়া হয়।’

অধ্যাপক ফায়েক উজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক। ২০১০ সালে ২৮ নভেম্বর তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক মো. শাইফুদ্দিন শাহ।

২০১২ সালের অক্টোবরে তার মেয়াদ শেষ হলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ফায়েক উজ্জামান। ২০১৩ সালে ১০ জানুয়ারি তিনি পূর্ণ উপাচার্যের দায়িত্ব পান। সেখান থেকে পরপর দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান তিনি। তার দিত্বীয় মেয়াদে রয়েছে অহরহ দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ।

এ বিভাগের আরো খবর