বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা হবে যেভাবে

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:০৭

সারা দেশে একই দিনে ২ ঘণ্টা সময়ে শেষ করতে হবে বৃত্তি পরীক্ষা। একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে এই পরীক্ষায়। বাংলা, প্রাথমিক গণিত, ইংরেজি ও প্রাথমিক বিজ্ঞান- এই চার বিষয়ে ২৫ নম্বর করে সর্বমোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণীতে সবশেষ বৃত্তি পরীক্ষা হয়েছিল ২০০৮ সালে। ১৩ বছর পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সেই বৃত্তি পরীক্ষা পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বর একই দিনে চার বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে এই পরীক্ষা।

এর আগে ২০০৯ সালে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) শুরু হলে বাদ হয়ে যায় বৃত্তি পরীক্ষা। পিএসসির ফলের ওপর ভিত্তি করে তখন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হতো। গত তিন বছর করোনার কারণে পিএসসি পরীক্ষা হয়নি।

চার বিষয়ে ১০০ নম্বর ও একই দিনে ২ ঘণ্টা সময়ে শেষ করতে হবে বৃত্তি পরীক্ষা। একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে এই পরীক্ষায়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত ও প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা হবে।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পরীক্ষার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার অধিদিপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সই করা নির্দেশনায় মানবণ্টন ও প্রশ্নের কাঠামো কেমন হবে তা বলে দেয়া হয়েছে।

প্রশ্ন কাঠামো ও মানবণ্টন

শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র সংবলিত বুকলেট সরবরাহ করা হবে। বুকলেটের নির্ধারিত জায়গায় টিক চিহ্ন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে লিখে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। পৃথকভাবে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে না।

বাংলা, প্রাথমিক গণিত, ইংরেজি ও প্রাথমিক বিজ্ঞান- এই চারটি বিষয়ের প্রতিটির জন্য ২৫ নম্বর করে সর্বমোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

প্রতি বিষয়ে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে, প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর। প্রতি প্রশ্নের চারটি অপশনের মধ্যে সঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিতে হবে। সঠিক উত্তর নির্বাচনে একাধিক অপশনে টিক চিহ্ন দেয়া যাবে না। একাধিক অপশনে টিক চিহ্ন দেয়া হলে ওই প্রশ্নের উত্তরের জন্য নির্ধারিত নম্বর মিলবে না।

বাংলা বিষয়ে দুটি অনুচ্ছেদ দেয়া থাকবে। তা থেকে চারটি করে আটটি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। অপর ৭টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে পুরো পাঠ্যপুস্তক থেকে। একটি রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে, যার নম্বর ১০।

গণিত বিষয়ে সমগ্র পাঠ্যপুস্তক থেকে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। দুটি সমস্যা সমাধানমূলক প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটির মান ৫ নম্বর করে মোট ১০ নম্বর। ইংরেজি বিষয়ে পুরো পাঠ্যপুস্তক থেকে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। একটি বিষয়ে অনুচ্ছেদ লিখতে হবে। যার মান ১০ নম্বর। প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে পুরো পাঠ্যপুস্তক থেকে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। দুটি রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটির মান ৫ নম্বর করে মোট ১০ নম্বর।

পরীক্ষার্থী নির্বাচন

প্রাথমিক বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে মেধা যাচাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মেধাভিত্তিক সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য মনোনীত করবেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

২০ শতাংশ শিক্ষার্থী যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সম-নম্বরধারীদের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক নম্বরের ক্রমানুসারে মনোনয়ন দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যথাক্রমে বাংলা, গণিত, ইংরেজি, প্রাথমিক বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করতে হবে। একাধিক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ৬টি বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর একই হলে সে ক্ষেত্রে শ্রেণি রোল নম্বর প্রাধান্য পাবে।

২০ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী সংখ্যা ভগ্নাংশ হলে গাণিতিক নিয়মে ০.৫ এবং তদূর্ধ্ব ভগ্নাংশকে পরবর্তী পূর্ণ সংখ্যায় রূপান্তর করে শিক্ষার্থী সংখ্যা গণনা করতে হবে।

নম্বর বণ্টন

প্রাথমিক বৃত্তিতে ৮০ থেকে ১০০-এর মধ্যে নম্বর পেলে তা এ প্লাস বা গ্রেড পয়েন্ট পাঁচ হিসেবে গণ্য হবে। এরপর ৭০ থেকে ৭৯ হলে গ্রেড পয়েন্ট থাকবে ৪, ৬০ থেকে ৬৯ হলে ৩ দশমিক ৫, ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর পেলে হবে ৩, ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর পেলে ২ এবং ৩৩ থেকে ৩৯ নম্বর পেলে ১ পয়েন্ট হিসেবে ধরা হবে। এর নিচে কেউ নম্বর পেলে সে অকৃতকার্য হবে।

পরীক্ষা প্রত্যাহারের দাবি

এদিকে ১৩ বছর পরে হুট করে বৃত্তি পরীক্ষা না নেয়ার দাবি করেছেন দেশের ২৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠামো বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ও নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

২৯ জন নাগরিকের মধ্যে আছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ার ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, প্রখ্যাত অভিনেতা ও নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনসহ অন্যান্যরা।

তারা মনে করেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী শিক্ষায় পরিবর্তনের যে ইতিবাচক ধারা তৈরি হচ্ছে, সেখানে এভাবে হুট করে বৃত্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হলে শিক্ষার্থীদের ওপর নানামুখী মানসিক ও শারীরিক চাপ পড়বে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

এ বিভাগের আরো খবর