বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবিতে ফুটবল উৎসবে শিক্ষার্থীদের একাংশের ক্ষোভ  

  •    
  • ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:০৩

গাড়িচাপায় গৃহবধূ রুবিনা আক্তারের মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্যাম্পাসে রাতের বেলায় বড় পর্দায় বিশ্বকাপ খেলা না দেখানোর দাবি জানায়, তবে সেটি না ঘটায় ক্ষোভ জানিয়েছে তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহর প্রাইভেট কারের চাপায় নারী নিহত হওয়ার ঘটনার মধ্যে ক্যাম্পাসে ফুটবল উৎসব নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।

প্ল্যাকার্ড হাতে সড়কে দাঁড়িয়ে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারা এ ক্ষোভের কথা জানান।

ননদের স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে শুক্রবার ঢাবি হয়ে হাজারীবাগ যাচ্ছিলেন গৃহবধূ রুবিনা আক্তার। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে চারুকলা অনুষদের বিপরীতে পাশের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় আজাহারের গাড়ির ধাক্কায় তিনি পড়ে যান। পরে আজাহার গাড়ি না থামিয়ে রুবিনাকে টেনেহিঁচড়ে নীলক্ষেত পর্যন্ত নিয়ে যান। এতে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পর ঢাবি শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের বেলায় বড় পর্দায় বিশ্বকাপ খেলা না দেখানোর দাবি জানায়, তবে শুক্রবার মধ্যরাতে ব্রাজিল-ক্যামেরুনের ম্যাচের সময় চেনা দৃশ্য দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল মাঠ ও টিএসসিতে।

এতে ক্ষুব্ধ কিছু শিক্ষার্থী মধ্যরাতেই রাজু ভাস্কর্যে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানান। তাদের একজন এসএম হল ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অনিরাপদ, আমি এখানে দাঁড়িয়ে যখন রুবিনা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছি, তখনও ক্যাম্পাসে অনিরাপদের সব আয়োজন চলছে।

‘এই খেলা দেখার ছলে ক্যাম্পাসের বাইরের অন্তত কয়েক হাজার লোক এখানে অবস্থান করছে। তারা ভুভুজেলা বাজিয়ে শব্দদূষণ করছে। তাদের শব্দদূষণের কারণে এখন যাদের পরীক্ষা চলমান, তাদের কেউ পড়তে পারছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের মর্মান্তিক ঘটনা জানার পর যে কেউ একটু সংবেদনশীল হবে, কিন্তু এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসব চলছে।

‘খেলা উৎসব। আমরাও দেখব, কিন্তু বড় পর্দায় সম্মিলিতভাবে না দেখালে কি হতো না আজ? বিভিন্ন করপোরেট ব্যানারের আড়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব কালো মুখ লুকিয়ে আছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে।’

এদিকে ফেসবুকে মনসুর রাফি নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘আজ দুপুরে একটি রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে৷ সেই রক্ত শুকানোর আগেই ফুটবল উৎসবে মেতে উঠেছি আমরা। ছি!’

আজহার উদ্দীন অনিক নামে আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘আমি আশা করেছিলাম, অন্তত আজকের মতো হৈ-হুল্লোড় করে খেলা দেখা বন্ধ থাকবে। যেহেতু ওই নারীকে গাড়ির তলায় চেপে টিএসসি থেকেই নীলক্ষেতের দিকে মুহসীন হলের মাঠের বিপরীত রাস্তা দিয়েই পিষে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু আমি জানি সেটা অবাস্তব আশা; কিছু হবে না।’

সানজানা আফিফা অদিতি নামের একজন লেখেন, ‘এখনও খেলা দেখা হচ্ছে!!! বাঁশি বাজানো হচ্ছে!!! আপনাদের বিবেক কি একটুও কাজ করে না??? এতদিন তো প্রতিদিন বাঁশি বাজিয়ে খেলা দেখলেন। আজও???’

সাইদ আবদুল্লাহ লেখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নারীকে গাড়ির চাকায় আটকে টেনে নিয়ে পিষিয়ে পিষিয়ে মারা হয়েছে, রাস্তায় এখনও হয়তো তার রক্তের দাগ শুকায় নাই। অথচ এর ভেতরেই সেই ক্যাম্পাসেই বড় পর্দায় বিশ্বকাপ খেলা দেখার হিড়িক লেগে গেছে, বাজছে বাঁশি, হচ্ছে লাফালাফি-ঝাঁপাঝাঁপি।

‘ভাবতে অবাক লাগে, এই ক্যাম্পাসের ছাত্ররাই একসময় ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিত। আর এখনকার ছাত্ররা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ তো নয়ই, বরং আনন্দ-উৎসবে মত্ত থাকাটাই প্রেফার করে!’

এ বিভাগের আরো খবর