বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

থানায় গিয়ে বিয়ে ঠেকানো মেয়েটি পেল জিপিএ ফাইভ

  •    
  • ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:১২

ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে শ্রাবন্তী পরীক্ষা দিয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘শ্রাবন্তী শুধু নিজের জন্য নয়, আমার প্রতিষ্ঠানের জন্যও গৌরব বয়ে এনেছে। শ্রাবন্তীর এই সাফল্য ও বাল্যবিয়ে রোধ করার সাহসী মনোবল একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে ঠিক হয়েছিল শ্রাবন্তী সুলতানার। তবে তাতে রাজি ছিল না সে। পরে একাই থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে বাল্যবিয়ের অভিযোগ দেয়। পুলিশ গিয়ে তার পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়ে বাতিল করে। তার সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে পড়াশোনার খরচ চালানোর দায়িত্ব নেয় স্থানীয় প্রশাসন।

সেই শ্রাবন্তী এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে, পেয়েছে জিপিএ ফাইভ। পড়া শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হতে চায় সে।

সাহসী এই কিশোরীর রেজাল্টে গর্বিত তার মা ও স্কুলের শিক্ষকরা।

শ্রাবন্তী বলে, ‘আমি নিজের বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে অনেক মেয়ে সেটা পারছে না। পরিবারের চাপে বাল্যবিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে অকালে ঝরে পড়ছে অনেকে।

‘আমি সমাজে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই।’

শ্রাবন্তীর মা বিউটি খাতুন বলেন, ‘আমি একটি মুড়ির কারখানায় কাজ করি... আমার স্বামী ও ছেলে থাকে যশোরে। অভাবের সংসারে মেয়েকে লেখাপড়া করানোর সাধ্য ছিল না। তাই গত বছর তার বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

‘কিন্তু আমার মেয়ে পড়তে চেয়েছিল। আমরা বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় সে থানায় গিয়ে হাজির হয়। তারপর পুলিশ এসে আমাদের বুঝালে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি। আমার মেয়ে খুব মেধাবী। আমি তার ফলে খুব সন্তুষ্ট। যত কষ্টই হোক না কেন, আমি আমার মেয়েকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলব।’

ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে শ্রাবন্তী পরীক্ষা দিয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘শ্রাবন্তী শুধু নিজের জন্য নয়, আমার প্রতিষ্ঠানের জন্যও গৌরব বয়ে এনেছে। শ্রাবন্তীর এই সাফল্য ও বাল্যবিয়ে রোধ করার সাহসী মনোবল একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

গত বছর সেপ্টেম্বরে বিয়ে ঠিক হয়েছিল শ্রাবন্তীর। পুলিশ নিয়ে এসে বাসায় বুঝিয়ে বিয়ে বাতিল করায় সে। তার এই পদক্ষেপের কারণে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সেইবার শ্রাবন্তীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন থেকে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছিল তাকে। স্কুলে যাতায়াতের খরচের বিষয়ে সহযোগিতা করেন তৎকালীন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

পড়াশোনা চালিয়ে নিতে এই সহায়তা পাওয়ায় পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে শ্রাবন্তী ও তার পরিবার।

এ বিভাগের আরো খবর