বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উৎসবমুখরতায় শেষ হলো ঢাবি’র ৫৩তম সমাবর্তন

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৪৫

সমাবর্তন বক্তা নোবেল জয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. জেন তিরেল বলেন, ‘পেশাজীবনে সফলতা অর্জনের জন্য গ্র্যাজুয়েটদের আত্মবিশ্বাস, দায়িত্ববোধ ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা থাকতে হবে। পরিকল্পিত উপায়ে কঠোর পরিশ্রম করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার এই আয়োজন ঘিরে কার্জন হল, কলা ভবন, অপরাজেয় বাংলাসহ পুরো ক্যাম্পাস গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সমাবর্তনে বক্তব্য দেন। নোবেল বিজয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. জেন তিরেল তিরোল সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অফ ল’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

সমাবর্তনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। সাইটেশন পাঠ করেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এ সময় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মো. আব্দুল হামিদ তার বক্তব্যে সত্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সব ধরনের সংকীর্ণতা ও ধর্মান্ধতা থেকে নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যদের মুক্ত রাখতে হবে। প্রগতি, আধুনিকতা ও সহনশীলতার দিকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার্জন যেন সমাবর্তন আর সার্টিফিকেটেই সীমাবদ্ধ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

‘আজকের এই অর্জনের পেছনে বাবা-মা, শিক্ষকমণ্ডলী এবং রাষ্ট্রের যে অবদান ও ত্যাগ রয়েছে তা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু উচ্চ শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান নয়। এটি আমাদের নেতৃত্বের প্রতীক, আমাদের পথপ্রদর্শক। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক, আর তা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’

পড়াশোনা ও গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণ গবেষকদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। কিছুসংখ্যক অসাধু লোকের কর্মকাণ্ডের জন্য গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষক হিসেবে নিজ পেশার প্রতি দায়িত্বশীল থাকতে হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবজ্ঞান নির্মাণের ব্রতকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মতো প্রযুক্তি-মুখ্য বিশ্বব্যবস্থার উপযোগী করে এর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। বহুমুখী বাস্তবতাকে সামনে রেখে এই বিদ্যাপীঠ আগামী একশ’ বছরে কোন পথে এগিয়ে যাবে তা নির্ধারণে প্রয়াস চলছে।’

তিনি বলেন, গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন একাডেমিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করা হয়েছে। একাডেমিক যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ‘একাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা’ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক ও গবেষকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি এ নিরিখে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্বাচল প্রকল্পে নলেজ-হাব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা-উদ্ভাবন ক্যাম্পাস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও গ্রাজুয়েটবৃন্দ যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের আত্মপ্রত্যয়ীরূপে বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করতে সক্ষম হোক।’

সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. জেন তিরেল বলেন, ‘পেশাজীবনে সফলতা অর্জনের জন্য গ্র্যাজুয়েটদের আত্মবিশ্বাস, দায়িত্ববোধ ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা থাকতে হবে।’

এক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত উপায়ে কঠোর পরিশ্রম করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য ও অগ্রগতি অর্জনের জন্য তিনি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, এই সমাবর্তনে ৩০ হাজার ৩শ’ ৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও উপাদানকল্প কলেজ/ইনস্টিটিউটের গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ সমাবর্তনের মূল ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর