প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনব্যবস্থা বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়ে আছে। ওয়ার্কশপ না থাকায় ছোট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা দখল করে গাড়ি মেরামত ও ধোয়া-মোছার কাজ চলে।
যত্রতত্র পার্কিং আর সংকীর্ণ রাস্তায় গাড়ি সারানোর কারণে হাঁটাচলায় ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
কলা ভবনের সামনে বেশ কয়েকটি পুরোনো নষ্ট বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে কয়েক মাস ধরে। প্রায় প্রতিদিনই ভবনের সামনের রাস্তায় চলে বাসসহ নানা গাড়ির মেরামতের কাজ। চলে ধোঁয়া-মোছার কাজও। এতে কাদা জমে হাঁটাচলায় তৈরি হয় সমস্যা। গাড়ি মেরামতের শব্দও শিক্ষার্থীদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শান্ত চত্বর ও বিজ্ঞান অনুষদের রাস্তায়ও চলে একই কাজ। রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করিয়ে চলে মেরামত ও গাড়ি ধোয়ার কাজ। নিয়মিতই কাদা ও ময়লা লেগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জামাকাপড় নষ্ট হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টির বেশি বাস রাখা হয়েছে কলা ভবন, বিজ্ঞান অনুষদ ও শান্ত চত্বরের রাস্তায়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুকাইয়া ইসলাম বলেন, 'আমাদের বিভাগের সামনেই রাস্তায় প্রায় প্রতিদিন গাড়ি মেরামত করা হয় বা ধোয়া হয়। পুরো রাস্তা কাদা পানিতে ভরে যায়। আমরা ঠিকমতো চলাচলও করতে পারি না।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, ‘রাস্তার ঠিক মাঝখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মেরামত আর ধোয়ার কাজ করা হয়। ময়লা পানির ছিটে এসে জামাকাপড় নষ্ট হয়। ঠিকমতো চলাচলও করা যায় না। পশ্চিম পাশেও নষ্ট বাস রেখে দিয়েছে। সামনেও রেখে দিয়েছে। রাস্তার মাঝখানেও এমন কাজ করে।'
গাড়িগুলোর সুরক্ষা ও মেরামতের জন্য টিনশেডের একটি অস্থায়ী ওয়ার্কশপ নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে গত ২৮ নভেম্বর একটি কমিটি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবুল হোসেনের নেতৃত্বে এই কমিটি চার মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকের সামনের জায়গা নির্ধারণ করে দেয়। পরে সেখানে থাকা কর্মচারীদের আবাসস্থল ভেঙে তা নিলামে বিক্রি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভবন ভাঙার কাজও প্রায় চার মাস আগে শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু সেই ওয়ার্কশপ আর নির্মাণ হয়নি। নির্ধারিত জায়গা পড়ে থাকলেও খসড়া নকশায়ই আটকে আছে কাজ।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, 'আমরা অনেক আগেই একটা খসড়া নকশা করে রেখেছি। কোথায়, কীভাবে ওয়ার্কশপ করা হবে, কীভাবে নির্মাণ করা হবে। পরিবহন দপ্তরকে অনেকবার বলেছি গাড়ির জন্য কতটুকু জায়গা লাগবে তার চাহিদা দিতে। কিন্তু তারা এর কোনো জবাব দেয়নি।'
জায়গাটিতে পরিবহন মেরামতের জন্য ওয়ার্কশপ করার পর জায়গা থাকলে ছোট ক্যাফেটেরিয়ার নকশাও করে রেখেছে প্রকৌশল দপ্তর। এখানে পূজা উদযাপনের জন্য একটি কক্ষ করে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক সিদ্ধার্থ ভৌমিক বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেনই না। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমি দপ্তরে নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। এই সম্পর্কে কিছু জানা নেই। আমি এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের দপ্তরকে নির্দেশ দিচ্ছি।’