চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটকে শহর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে কমিটি করে দিয়েছে প্রশাসন।
চবি উপাচার্য ও প্রশাসনের সঙ্গে শুক্রবার চারুকলার শিক্ষকদের বৈঠক হয়। সে বৈঠকে স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠক শেষে ১৪ সদস্যের কমিটি করার কথা জানান চবির প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বৈঠক করেন উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টোরিয়াল টিম ও চারুকলার শিক্ষকরা। বৈঠক থেকে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ মামুনকে প্রধান করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনে ১৪ সদস্যের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
পরবর্তী সময়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কমিটির বিষয়ে জানানো হলে তারা এ নিয়ে আপত্তি জানান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মনে করেন, চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না জানিয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে আন্দোলন দীর্ঘ করার সুযোগ সৃষ্টি করা হলো।
আন্দোলনরত স্নাতকোত্তরের ছাত্র মোহাম্মদ শহীদ বলেন, ‘রোববার চারুকলা স্থানান্তরের বিষয়ে একটা আবেদন করেছিলাম। সেটির বিষয়ে তিন দিন সময় চাওয়া হয়েছিল। গত বুধবার একাডেমিক কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তবে সেদিন বৈঠক না করে বৃহস্পতিবার বৈঠক হয়।
‘বৈঠক শেষে আমাদের সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। ওই দিন বিকেলে আমরা সড়ক বরোধ করলে শুক্রবার সিদ্ধান্ত জানানোর আশ্বাস দেয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবারও একাডেমিক কমিটি কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তারা বিভিন্ন জটিলতার কথা বলছেন। শিক্ষক ও প্রশাসন বৈঠক করে ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে আমাদের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে গেছেন। আমরা কোনো কমিটি চাইনি; আমরা সিদ্ধান্ত চেয়েছি। আমাদের আন্দোলন চলবে।’
চারুকলা প্রথম বর্ষের ছাত্রী আশা খাতুন বলেন, ‘আমাদের যে কমিটির কথা বলা হচ্ছে, সেটা আমরা মানছি না। মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা আন্দোলন চলমান থাকবে।’
বৈঠক শেষে প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চবি উপাচার্য ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলাদাভাবে কয়েক দফা বসেছেন। চারুকলার চলমান দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ মামুন, চারুকলার সিনিয়র শিক্ষক ঢালী আল মামুন, দুইজন সহকারী প্রক্টরসহ ১৪ শিক্ষকের একটি কমিটি করা হয়েছে।
‘এই কমিটি শিক্ষার্থীদের চারজন প্রতিনিধির সঙ্গে বসবে। এই চারজন প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়েই কমিটি কাজ করবে।‘
প্রক্টর আরও বলেন, এই দাবি কয়েকটি পর্ষদে পাস হয়ে যেতে হবে। এ জন্য দালিলিক কোনো সমস্যা আছে কি না, ক্যাম্পাসে গেলে তারা কীভাবে থাকবে, কী কী সুবিধা-অসুবিধা আছে, প্রতিটা বিষয় কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। এই যাচাই-বাছাইয়ে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরাও থাকবে।