বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) গেট অবরোধ করে পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার তালিকার অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা। এ সময় তারা প্রতীকী ‘প্রাপ্যতার মুলা’ ঝুলিয়ে কর্মসূচি পালন করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নন-ক্যাডারদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির শুরুতে তারা ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ১ মিনিটের নীরবতা পালন করেন। পিএসসি প্রাঙ্গণের ময়লা পরিষ্কার, প্রতিবাদী গান গাওয়া ও কবিতা আবৃত্তি করেন তারা।
তবে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে দুপুরে তারা ‘প্রাপ্যতার মুলা’ ঝুলিয়ে অবস্থান নেন।
চাকরি প্রার্থীরা নিউজবাংলাকে বলেন, পিএসসি যে বিভ্রান্তিমূলক মুলা ঝোলানো বক্তব্য ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেয়া হবে’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয় তার প্রতিবাদ করেছি আমরা।'
এর আগে বেলা ১১টার পর প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে প্রার্থীরা পিএসসির চারপাশ প্রদক্ষিণ করেন।
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, পিএসসির চেয়ারম্যান আজও দুপুর রোদে বসে থাকা প্রার্থীদের কষ্ট উপেক্ষা করে দাবির বিষয়ে ন্যূনতম কোনো বক্তব্য দেননি।
শুক্রবার অশুভ অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিকেল ৪টা থেকে সমবেত জাতীয় সংগীত, দুর্নীতিবিরোধী শপথ, প্রতিবাদী গান, কবিতা পাঠ ও সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।
গত ৩০ অক্টোবর থেকে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ৪০তম বিসিএস এ উত্তীর্ণ হওয়া নন-ক্যাডার প্রার্থীরা।
তাদের দাবিগুলো হলো:
১. বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তাই বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির পরে ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের এই বেকারবিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
২. বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার এর পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
৩. করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করতে হবে
৪. যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ২০২২ সালের ২৯ মার্চ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে হবে।
৫. বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসি মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে।’ এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৬. গত এক যুগে পিএসসি যে স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে ।