বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবির গবেষণা মেলায় আরবি হরফের কঙ্কাল কীভাবে

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:৩৪

মানব কঙ্কালের সঙ্গে আরবি হরফের মিল দেখানো পোস্টার নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া চলছে ফেসবুকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও প্রকাশনা মেলায় এ ধরনের পোস্টার প্রদর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মেলার আয়োজকেরা বলছেন, ওই পোস্টারটির বিষয়বস্তু তাদের জানা ছিল না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আয়োজিত গবেষণা ও প্রকাশনা মেলায় রসায়ন বিভাগের স্টলের একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইন ওই পোস্টারে দেখিয়েছেন, মানব কঙ্কালের সঙ্গে আরবি বেশ কিছু হরফের মিল রয়েছে। এসব হরফ ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং আল্লাহ লিখতে ব্যবহৃত হয়।

গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমালোচকেরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীদেহের হাড়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখিয়ে বিভিন্ন ভাষার হরফের সঙ্গে মেলানো সম্ভব। এ কারণে এ ধরনের বিশ্লেষণ অযৌক্তিক। আর মেলার আয়োজকেরা বলছেন, ওই পোস্টারটির বিষয়বস্তু তাদের জানা ছিল না। সমালোচনার পরপরই সেটি সরিয়ে ফলা হয়।

অধ্যাপক আবুল হোসাইন বলছেন, বিষয়টি কোনো গবেষণালব্ধ জ্ঞান বা ফাইন্ডিংস নয়। মানব কঙ্কাল নিবিড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে রিভিউ আর্টিকেল লিখেছেন, পরে সেটি পিয়ার রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিচালিত ইউএসজিএস ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পিয়ার রিভিউড প্রকাশনাকে কখনও কখনও একটি পাণ্ডিত্বপূর্ণ প্রকাশনা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। কোনো লেখকের পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজ, গবেষণা বা ধারণাগুলোর বৈজ্ঞানিক গুণমান নিশ্চিত করার জন্য একই বিষয়ের অন্য বিশেষজ্ঞরা এর খুঁটিনাটি দিক যাচাইবাছাই করে অভিমত দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইন

অধ্যাপক আবুল হোসাইনের আর্টিকেলটি ‘সিগনিফিক্যান্স অফ দ্যা স্ট্রাকচার অফ হিউম্যান স্কেলটন’ শিরোনামে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রকাশ করে আমেরিকান জার্নাল অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন। এটি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি পিয়ার রিভিউ জার্নাল।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হয়ে মানব কঙ্কাল পর্যবেক্ষণের কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক আবুল হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ফিল্ড রসায়ন। ২০১৬ সালে ড্রাগ নিয়ে কাজ শুরু করি। এই ড্রাগ যেহেতু মানুষের বডিতে কাজ করবে তাই বডির বিভিন্ন সাইজ জানা দরকার ছিল। সেটার জন্য আমি অ্যানাটমি বই পড়েছি। সেটার কেমিক্যাল কম্পোজিশন জানতে বিভিন্ন বই পড়তে হয়েছে।

‘এ কাজ করতে গিয়ে দেখলাম মানুষের বডির ফান্ডামেন্টাল যে অরগান স্কেলিটন (কঙ্কাল) অনেকটা আরবি অক্ষরের সঙ্গে মিলে যায়। আমি মূল গবেষণার কাজ করতে গিয়ে অ্যানাটমি-সম্পর্কিতসহ বিভিন্ন বই পড়েছি। সব বই তো আর সব সময় পড়ব না, তাই বইগুলোর কোথায় কী পেয়েছি সেটা লিখে সবগুলোর একটা সামারি আমি প্রকাশ করেছি।’

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইনের পর্যবেক্ষণ

তিনি বলেন, ‘এটা আমার রসায়নের ফান্ডামেন্টাল গবেষণা আর্টিকেল নয়। এটা একটা রিভিউ আর্টিকেল। আমার সাবজেক্টে কাজ করতে গিয়ে এটা একটা সাইড প্রোডাক্ট।

‘এটা আমি রিভিউ আর্টিকেল হিসেবে মেলায় পোস্টার আকারে শো করেছি। এরপর বিভাগ থেকে যখন বলা হয়েছে এটা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে তখন সরিয়ে নিয়েছি।’

অধ্যাপক হোসাইন বলেন, ‘মেলায় আমার যে পোস্টার ছিল সেখানে তিনটা পার্ট ছিল। একটা ছিল সারফেস ক্যামিস্ট্রি, আরেকটা ন্যানো ক্যামিস্ট্রি আরেকটা ছিল ইন্টার ডিসিপ্লিন সায়েন্স অ্যান্ড রিলিজিয়ন নিয়ে। যেটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে সেটা ছিল সবশেষ ক্যাটাগরির মধ্যে।

‘এটা কারও পছন্দ হতে পারে বা না হতে পারে। কারও বিশ্বাসের ওপর আঘাত করার কোনো ইন্টেনশন আমার ছিল না।’

অধ্যাপক আবুল হোসাইন রিভিউ আর্টিকেলটি প্রকাশের জন্য ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি জমা দেন। এরপর পর্যালোচনা শেষে ১৬ জানুয়ারি সেটি প্রকাশ করা হয়।

অধ্যাপক হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আর্টিকেল পাবলিশের পর অনেক মুসলমান এবং আমার শ্বশুর বলেন আরও অনুসন্ধান করতে। এরপর আমি কোরআন-হাদিস নিয়ে বিভিন্ন স্টাডি করি। ইসলাম সম্পর্কে জানাশোনা আছে এ রকম বেশ কিছু গবেষকের সাহায্যও নিই।

‘এসব করে দেখেছি, কোরআন শরিফের সুরা তীনের একটা আয়াতের সঙ্গে এটার কিছুটা মিল আছে। এরপর আমি ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন লেখাপড়া করে ধর্মের সঙ্গে এটার কোনো লিংক আছে কি না, সেটি দেখার চেষ্টা করেছি। আর এসব নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার একটি জার্নালেও আর্টিকেল সাবমিট করি।’

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইন (মাঝে) ও তার পর্যবেক্ষণ

ইন্দোনেশিয়ার সেই জার্নালটির নাম ‘আর রানিরি: ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ইসলামিক স্টাডিজ।’ এই জার্নালে অধ্যাপক হোসাইনের নিবন্ধটি ২০১৮ সালের জুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়

অধ্যাপক আবুল হোসাইন বলেন, ‘এটাও রিভিউ আর্টিকেল ছিল। কারণ আমি এখানে তো কোনো ল্যাব এক্সপেরিমেন্ট করিনি। কোরআন আর হাদিসের বিভিন্ন অংশকে আমি ব্যাখ্যা করেছি। তবে হালকা কিছু থিউরিটিক্যাল গবেষণা ছিল।’

আর রানিরি জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলে অধ্যাপক হোসাইন দাবি করেছেন, মানুষের কঙ্কালের প্রধান অংশ মাথার খুলির সঙ্গে কোরআনে বর্ণিত তিন ফল অর্থাৎ জলপাইয়ের গঠনের মিল আছে। আর এটি আরবি হরফ ‘মিম’-এর মতো।

তিনি বলছেন, মানুষের বুকের পাঁজরের সঙ্গে সিনাই পর্বতের গঠনের মিল আছে। এটি আরবি হরফ ‘হা’-এর মতো। কোমরের সঙ্গে আছে ডুমুর ফলের মিল, যা আরবি হরফ ‘মিম’-এর মতো।

মানুষের হাঁটু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত মক্কা নগরীর মিল আছে। এটি আরবি হরফ ‘দাল’-এর মতো। আর এসব হরফের সমন্বয়ে মুহাম্মদ (সা.) নামটি লেখা হয়।

অধ্যাপক আবুল হোসাইন মনে করছেন, মানুষের হাতের পাঁচ আঙুলের গঠনটি আলিফ, লাম, লাম এবং হা এর সদৃশ। এসব হরফের সমন্বয়ে আল্লাহ লেখা হয়।

অধ্যাপক হোসাইন বলেন, ‘আমি রসায়নে কাজ করি বলে কি অন্য কোনো ফিল্ডে কাজ করতে পারব না? রসায়নের অনেক অধ্যাপক পদার্থবিজ্ঞান বা ম্যাথ ফিল্ডেও তো কাজ করেন। আবার ইন্টার ডিসিপ্লিন ফিল্ডেও কাজ করেন।’

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসাইনের পর্যবেক্ষণ

কঙ্কালকে ধর্মের সঙ্গে মেলানোয় বিস্ময়

অধ্যাপক আবুল হোসাইনের পর্যবেক্ষণ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রাণিবিদ্যার বিশেষজ্ঞরাও এ ধরনের পর্যবেক্ষণে বিস্ময় প্রকাশ করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নিয়ামুল নাসের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ একজন অন্ধের মতো কথা বললে তো হয় না। আমার কাছে মনে হয় এগুলো একটা সিস্টেম, শুধু মানব কঙ্কাল কেন, যেকোনো প্রাণীর কঙ্কালের ডিজাইন কাছাকাছি। এই ডিজাইনের মধ্যে ধর্মকে নিয়ে এলে কী ঠিক হবে? এসব কথাবার্তা আমাদের মূর্খতার পরিচয় হবে।’

একজন প্রাণিবিজ্ঞানীর অবস্থান থেকে অধ্যাপক নিয়ামুল বলেন, ‘আমরা ওইভাবে (ধর্মের আলোকে কঙ্কালকে ব্যাখ্যা) দেখি না। আমরা একটি প্রাণীর দিকে দেখি। প্রাণীটাকে রক্ষা করার জন্য যা করা দরকার সেটা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করি, সেটাই আমাদের গবেষণা।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে, সেখানে কোন কঙ্কাল কার মতো দেখতে সেগুলো নিয়ে বলার সময় আমাদের থাকে না। কঙ্কালের মধ্যে আমরা আমাদের ধর্ম-সংস্কৃতিকে নিয়ে আসতে পারি না। কঙ্কাল নিজস্ব সিস্টেমে তৈরি। মানব কঙ্কালের মতো আরও অনেক প্রাণীর কঙ্কাল আছে। সেখানে এটা দেখা গেছে, অমুক হরফ দেখা গেছে- এটা তো বলা যায় না।

‘ওইভাবে খুঁজতে গেলে তো অনেক ভাষার অক্ষরই দেখতে পাব। আমাদের ভাষায় হোক, অন্য ভাষায় হোক, কোনো না কোনো ভাষার সঙ্গে তো মিলবে। আমরা তো আসলে এগিয়ে যাচ্ছি, পেছন দিকে ফেরত যাওয়া কী ঠিক হবে?’

তিনি বলেন, ‘ধর্ম তো সবকিছুর ঊর্ধ্বে। সেখানে কেন আমি এটাকে এই ছোট জিনিসের মধ্যে নিয়ে আসব?’

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কঙ্কাল বা হাড়কে বিভিন্নভাবে দেখা সম্ভব

মেলা সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ২১ ও ২২ অক্টোবর আয়োজিত হয় গবেষণা ও প্রকাশনা মেলা।

সেখানে রসায়ন বিভাগের স্টলের জন্য পোস্টার নির্ধারণ কোন প্রক্রিয়ায় হয়েছে জানতে চাইলে বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহিদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা কমিটি গঠন করে তাড়াহুড়ো করে দেয়া হয়েছে। আর পোস্টারে এমন কিছু ছিল না যে এত তোলপাড় করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে পাবলিশড প্রকাশনাগুলো দেয়া হয়েছে। পোস্টারের জন্য একটা কমিটি করে দেয়া হয়েছিল । তারাই এটি করেছে।’

অধ্যাপক হোসাইনের আলোচিত পোস্টারের ব্যাপারে বিভাগ জানত কি না, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘তিনি (অধ্যাপক হোসাইন) সেভাবে আমাদের শো করে… এমনি একটা কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তবে কে কোনটা দিচ্ছে সেটা অত... (যাচাই) করা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছিল তো তাই।’

গবেষণা মেলায় রসায়ন বিভাগের স্টল নিয়ে বিভাগটির অ্যাকাডেমিক কমিটি বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করে। এর একটি হলো কো-অর্ডিনেট কমিটি।

এই কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবু বিন হাসান সুশান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেলায় গবেষণাকর্ম প্রদর্শনের জন্য অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় সব শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়। ২৫ জন শিক্ষক তাদের গবেষণার পোস্টার দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে কর্তৃপক্ষ জানায় ২৫টা দেওয়া যাবে না। পরে আমরা ১২টা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

‘এরপর প্রশ্ন ওঠে এই ১২টা কারা দেবে। তখন বলা হয়েছে শতবর্ষ উপলক্ষে গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া গ্র্যান্ট যারা পেয়েছেন তাদের দিতে হবে। তারা দেয়ার পর কোনো পোস্টারের স্ট্যান্ড খালি থাকলে কেউ সেকেন্ড পোস্টার বা বাকিরা দিতে পারবেন।’

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কঙ্কালকে বিভিন্নভাবে দেখা সম্ভব

ড. সুশান বলেন, ‘সেই গ্র্যান্ট আবুল হোসাইনও পেয়েছেন। বলা হয়েছে, রিসার্চ অ্যাচিভমেন্ট হিসেবে কে কোনটা দেবে সেটা তার নিজের রেসপন্সবিলিটি। অধ্যাপক আবুল হোসাইনও দিয়েছেন। পরে তিনি যখন একাধিক পোস্টার দিতে চেয়েছেন তাকে বলা হয়েছে কোনো স্ট্যান্ড ফাঁকা থাকলে দিতে পারেন।

‘এরপরই মূলত মেলায় একটা স্ট্যান্ড ফাঁকা দেখে তিনি ওই পোস্টারটি ঝুলিয়েছেন। তবে সমালোচনা শুরু হলে ওনারটা সরিয়ে আরেক অধ্যাপকের পোস্টার দেয়া হয়।’

অধ্যাপক সুশান বলেন, ‘মেলায় বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বই প্ল্যাকার্ড ছাপানো হয়েছে। এগুলোর ভেতর বিভাগের ইতিহাস, অর্জন এবং ভবিষ্যতের তথ্য গেছে। এসব কনটেন্ট বাছাইয়ে একটা কমিটি ছিল। সেগুলো চেক করা হয়েছে। তবে আসলে বিশ্বের কোথাও পোস্টার আগে চেক করে ডিসপ্লে করা হয় না। এটা প্রেজেন্টারের নিজস্ব রেসপন্সবিলিটি।’

অধ্যাপক হোসাইন এমন কোনো কাজ করছেন বলেও কারও জানা ছিল না দাবি করে অধ্যাপক সুশান বলেন, ‘আমরা জানি, উনি ক্রোমিয়াম না কী নিয়ে গবেষণা করছেন। সেটা সায়েন্টিফিক। সেটা ডিসপ্লে হয়েছে। কিন্তু এটার ব্যাপারটা সমালোচনা হওয়ার পর পোস্টার দেখে জানতে পেরেছি।

‘ব্যক্তিগতভাবে ওনার এই পোস্টারটার বিষয়বস্তু আমার লজিক্যাল মনে হয়নি। আমাদের বিভাগে প্রচুর রিসার্চ ফিল্ড আছে, কিন্তু সব বাদ দিয়ে এ রকম একটা বিষয়ে তিনি যে কাজ করেন, সেটা আমরা কেউ জানতাম না। উনিও কখনও জানাননি। আর এটা কোনো রিসার্চ নয়, ওনার থিংকিং হতে পারে। সেটা মেলায় দেয়াটাই প্রাসঙ্গিক ছিল না।’

অধ্যাপক আবুল হোসাইনের পোস্টার নিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুস সামাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেলায় আবুল হোসাইনের এটা ছাড়াও সায়েন্টিফিক একটা গবেষণাকর্ম ছিল। মেলা শুরুর পরে দুপুরে একটায় স্ট্যান্ড খালি পেয়ে তিনি তার ওই পোস্টারটি লাগিয়ে দেন।

‘আমি শুনেছি এটার ব্যাপারে বিভাগ অবহিত ছিল না। সমালোচনা শুরু হওয়ায় বিভাগের দৃষ্টিতে আসে এবং তাকে ডেকে এটি সরিয়ে ফেলতে অনুরোধ করা হয়। পরে তিনি সেটি সরিয়ে ফেলেন।’

আবদুস সামাদ বলেন, ‘তার এই পোস্টারটা মেলায় আসারই কথা না। এটা তো গৃহীত হয়নি। গবেষণা মেলার সঙ্গে এটা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিভাগকে বলেছি যেন ওনাকে সতর্ক করা হয়। আর এটা নিয়ে আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্যারও বলেছেন, ওনাকে সতর্ক করা হোক। অনুষদ থেকেও ওনাকে সতর্ক করা হবে, যাতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।’

এ বিভাগের আরো খবর