বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০ প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ

  •    
  • ২২ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:৫৪

ইউএনও রুমানা আফরোজ বলেন, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।

তার বিরুদ্ধে উপজেলার ২০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি বটতলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ৩ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগে সন্মানী হিসেবে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইজাবুল হককে সাথে নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুসহাক আলীর অফিসে গিয়ে একটি খামে ২৫ হাজার টাকা এবং আলাদাভাবে গাড়ি ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা দেন বটতলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রসিদ।

এ সময় গাড়ি ভাড়ার টাকা পকেটে রেখে খামটি খুলে দেখার পর রাগান্বিত হয়ে শিক্ষা অফিসার মুসহাক আলী বলেন, ‘একটি খাম কেন? তিনটি নিয়োগে তিনটি খাম দিতে হবে। মোট ৭৫ হাজার টাকা নিয়োগের সন্মানী বাবদ দিতে হবে।’

এত টাকা দিতে রাজি না হলে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রসিদ ও বিদ্যালয়ের সভাপতি ইজাবুল হককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, ‘টাকা না দিলে এসব ফাইল উপরেই তুলব না।’

পরে তারা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের রুম থেকে বেরিয়ে যান।

শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, তিনি উপজেলার বাঁকরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি নিয়োগ বাবদ ৩০ হাজার টাকা, সদ্য এমপিও ঘোষিত পাইকবান্দা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি অফিস সহকারী নিয়োগে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন যে ৩০ হাজার টাকা আগাম না দিলে তিনি নিয়োগ বোর্ডেই যাবেন না।

এ বিষয়ে বটতলী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রসিদ বলেন, ‘আমি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি গত ৯ সেপ্টেম্বর। আর অভিযোগের ৫ দিন আগে শিক্ষা অফিসার মুসহাক আলী আমাদের কাছে তার চাহিদামত টাকা দাবি করে গালিগালাজ করে অপমান করেন। এখন পর্যন্ত অভিযোগের কোনো সুরাহা হয়নি।’

অভিযোগে একাত্বতা পোষণকারী অন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা হলেন, তকিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান, নকুচা উচ্চ বিদ্যালয়ের সোলাইমান আলী, মান্দাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের শাহজাহান আলী, আকবরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সারোয়ার জাহান, শাশইল উচ্চবিদ্যালয়ের আবু বকর সিদ্দিক, মহেষপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মবকুল হোসেন, কাঁটাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ওমর ফারুক, বরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের গৌর চন্দ্র মাহাতো, পলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নার্গিস পারভীন, চকমূলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মোজাফফর হোসেন, উস্টি বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের তপন কুমার মন্ডল, নামুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিহাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাইফুল ইসলাম, বনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের তোফাজ্জল হোসেন, বাঁকরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের বাসেদ আলী, খরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের বাবলুর রশীদ, পাইকবান্দা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাহবুবুর রহমান এবং পাটুল বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম।

এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষা অফিসার তাদের কাছে থেকে অর্থ নিতেন। যদি কাউকে বিষয়টি বলা হয় তাহলে হুমকিও দিতেন।

অভিযুক্ত পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলীর সাথে কথা বলতে একাধিকবার তার ফোন নম্বরে কল দেয়া হলেও রিসিভ করেননি। পরে পরিচয় দিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার জবাব দেননি।

পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারাও তাদের মতো করে তদন্ত করবেন বলে জানান।

এ বিভাগের আরো খবর