বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রিভাও তো মানুষ, ভুল করতেই পারে: তিলোত্তমা

  •    
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৫৫

অভিযোগগুলোর বিষয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান কী জানতে চাইলে তিলোত্তমা বলেন, ‘সে জন্যই আমরা তাদের কমিটি স্থগিত রেখেছি। অধিকতর তদন্ত করা হবে। কিন্তু এখন ইডেনে তো তদন্ত করার পরিবেশই নেই। অধিকতর তদন্ত করে আমরা সেটি জানাব।’

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে এক ছাত্রীকে হুমকি দেয়ার অডিও নিয়ে অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদারের।

সম্প্রতি ঘটা ওই ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘সেই কল রেকর্ডের জন্য রিভা সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং ওই মেয়ের কাছেও ক্ষমা চেয়েছে। রিভা তো মানুষ। সে তো আর ফেরেশতা না। মানুষ তো ভুল করতেই পারে।

‘সেই ভুক্তভোগী মেয়েও বলেছে যে রিভার সঙ্গে তার আর কোনো সমস্যা নেই। সেই ভুল বোঝাবুঝির মীমাংসা হয়ে গেছে।’

বেশ কদিন ধরেই আলোচনায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ। এ নিয়ে সর্বশেষ ছাত্রলীগের কলেজ কমিটি স্থগিত এবং এক পক্ষের ১২ জন পদধারী ও চার কর্মীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা বলছেন, তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রোষানলের শিকার। অথচ কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে অডিও ফাঁস, নগ্ন করে ভিডিও ধারণের হুমকি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান কী জানতে চাইলে তিলোত্তমা বলেন, ‘সে জন্যই আমরা তাদের কমিটি স্থগিত রেখেছি। অধিকতর তদন্ত করা হবে। কিন্তু এখন ইডেনে তো তদন্ত করার পরিবেশই নেই। অধিকতর তদন্ত করে আমরা সেটি জানাব।’

ইডেন কলেজের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা বলায় নিজ অনুসারীদের দিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধরের অভিযোগ ওঠার পর গত শনিবার মধ্যরাত থেকে কলেজে বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত।

এর মাঝে ছড়িয়ে পড়ে রিভার হুমকি দেয়ার অডিও। ওই অডিওকে কেন্দ্র করেই দুই ছাত্রীকে ৭ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন এবং নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করার হুমকির অভিযোগও ওঠে ছাত্রলীগের এই নেত্রীর বিরুদ্ধে।

পরে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এক পর্যায়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলা হলে জটিল পরিস্থিতি ধারণ করে। এরপর কমিটি স্থগিত করে ১৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

তিলোত্তমা বলেন, ‘সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের শান্তিপূর্ণ প্রেস কনফারেন্সে তারা অতর্কিত হামলা করেছে। এটি চারটি চ্যানেলে লাইভ প্রচারিত হয়েছে। এরপর আমরা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপদপ্তর সম্পাদক সবার উপস্থিতিতে ভিডিও দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং কমিটি স্থগিত রেখেছি অধিকতর তদন্ত করার জন্য।’

অডিওর ব্যাপারটি মীমাংসা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

তিলোত্তমা বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে চারটা চ্যানেলের লাইভে সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে চেয়ার দিয়ে মারা, লাঞ্ছিত করা, চুল টেনে শুইয়ে ফেলা এবং পাড়া দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে যেসব সহসভাপতি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল তাদের লাঞ্ছিত করা এবং মাননীয় নেত্রীর ছবিযুক্ত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং সেগুলো পাড়া দেওয়া এগুলো আমাদের দলীয় ক্ষেত্রে অনেক বড় অপরাধ।

‘আর এই অপরাধের কারণে দল থেকে আমরা তাদের বহিষ্কার করেছি। ছাত্রলীগকে যারা বিতর্কিত করতে চায় তাদের ছাত্রলীগে থাকার কোনো দরকার নেই।’

‘কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে, আমাদের কথা না শুনে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে’ বহিষ্কৃতদের এমন প্রশ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিলোত্তমা বলেন, ‘তারা কি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে নাকি তাদের কোনো দিন ডেকে পাওয়া গেছে! তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমরা এই ঘটনার আগে দুইদিন ৬ ঘণ্টা করে ইডেনে গিয়ে বসে ছিলাম। তারা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি, কোনো কো-অপারেটিভ আচরণ করেনি এবং কোনো অভিযোগ জানাতেও আমাদের কাছে আসেনি।’

ইডেনের ঘটনায় ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি। পরে অবশ্য কমিটি নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ আপত্তি জানালে তিনি কমিটি থেকে সরে আসেন।

কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে স্থায়ী বহিষ্কার কেন জানতে চাইলে নিশি বলেন, ‘সেই ঘটনার তদন্ত করে আমরা কিছু তথ্য উপাত্ত ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছে দিয়েছি। আর উনাদের কাছেও হয়ত কিছু তথ্য ছিল। এসব তথ্য এবং অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত সত্য হয় তাহলে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক শোকজ না করে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে পারে।’

বেনজির হোসেন নিশি রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনি দাস তন্বীকে মারধরের ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি। সেই মামলা তদন্ত করে পিবিআই। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত এ ছাত্রলীগ নেত্রীসহ তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে তা মঞ্জুর হয়। তবে সেই মামলা এখনো চলমান থাকলেও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে নিশির বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিলে নিশি বলেন, ‘এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমার ছোট বোনের সঙ্গে আমার গ্যাঞ্জাম হতে পারে। এটা আমাদের সংগঠনের ব্যাপার। সেই ঘটনাটি সভাপতি সাধারণ সম্পাদক তদন্ত করেছে। যেহেতু আমরা দুজনই একই সংগঠনের এবং দুইজনেরই যেহেতু একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল সেজন্যই হয়তো কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর