পূজার ছুটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন৷ হল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর আবাসিক ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে তাদের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত পাল্টানো হয়।
শুক্রবার প্রভোস্ট শামীমা বেগম নিউজবাংলাকে হল খোলা রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূজার ছুটিতে হল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত পূজার ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। আর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে হল বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়।
কিন্তু ছাত্রীরা টিউশনসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ি যেতে ইচ্ছুক না হওয়ায় হলে থাকার আবেদন জানান। ফেসবুকেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে তারা। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও হল প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করতে থাকে। ছুটিতে বাড়ি না গেলে ছাত্রীরা কোথায় অবস্থান করবে সেটা নিয়েও নানা প্রশ্ন ওঠে।
কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক চঞ্চল বোসও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছুটিতে বন্ধ থাকে বলে কখনও শুনিনি। ঢাবিতে ৬ বছরের বেশি মুহসীন হলে ছিলাম, এক মুহূর্তের জন্যও কোনো হল বন্ধ থাকার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বরং ছুটিতে হলে থেকেই আমরা বেশি পড়াশুনো করেছি, লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেছি। অনেক ছেলেমেয়ে টিউশনি, চাকরি, পত্রিকা অফিসে কাজ করত। এরকম অদ্ভুত কথা তো শুনিনি। এসব কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় কনসেপ্টের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।’
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী বলেন, ‘ঢাকায় আমি টিউশন করাই। তাই এবার বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো না। হঠাৎ হল বন্ধের নোটিশ দেখে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া বন্ধের পরে আমাদের পরীক্ষাও ছিল। তবে হল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে খুশি হয়েছি।’
আরেকজন ছাত্রী বলেন, ‘যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এবারের ছুটিতে বাসায় যাওয়ারও ইচ্ছা ছিলো না। প্রশাসনের নিকট আবেদন থাকবে পরবর্তীতে যেন এভাবে হল বন্ধ না করা হয়।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সুমাইয়া সোমা বলেন, ‘কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল কখনও কোনো ছুটিতে বন্ধ থাকে না। এই হল প্রশাসন নতুন নতুন নিয়ম তৈরি করে এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলে।’
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীমা বেগম বলেন, ‘পূজার ছুটি শেষে কিছু বিভাগে ছাত্রীদের পরীক্ষা রয়েছে। তাদের কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
চলতি বছর দুটি ঈদেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলটি বন্ধ রাখা হয়। সে সময়ও ছাত্রীরা বিপাকে পড়ে।