ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদদীন হলের ক্যান্টিনে নষ্ট চাল এবং ফ্রিজে পচা মাংস পাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্যান্টিনে তালা ঝুলিয়েছেনে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
পরে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রশীদ এসে শিক্ষার্থী অভিযোগের ভিত্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যান্টিন বন্ধ ঘোষণা করেন।
শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
ছাত্ররা জানান, ১টার দিকে প্রথম বর্ষের কয়েকজন ছাত্র খাবারের মধ্যে পোকা পান। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। পরে তারা ক্যান্টিনের রান্নাঘরে গিয়ে সেখানে থেকে চালের বস্তা, ফ্রিজের রাখা মাংস, আটার খামির বের করে নিয়ে আসেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, চালের বস্তায় ছত্রাক জন্মেছে। চাল গুঁড়া গুঁড়া হয়ে গেছে। পেঁয়াজ এবং ফ্রিজে রাখা মাংসগুলোর অধিকাংশ পচা বলে অভিযোগ তাদের।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম বর্ষর কয়েকজন শিক্ষার্থী খেতে গিয়ে খাবারে পোকা পায়। পরে তারা ক্যান্টিন মালিককে তলব করে এর কারণ জানতে চায়। ক্যান্টিন মালিক কোনো সদুত্তর দিতে না পারলে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের রান্নাঘরে যায়।’
‘এ সময় শিক্ষার্থীরা দেখেন, ভাতের চালটা খুদের মতো। অনেক দিন আগের। বস্তার তারিখও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। আর রান্না করা ভাতগুলোকে রাখা হয়েছে বাসন ধোয়ার কলের সামনে। যেখানে নিশ্চিতভাবেই ময়লা পানি ভাতের ওপর পড়বে।
‘ফ্রিজের অধিকাংশ মাংস ছিল অনেক দিন আগের। এ ছাড়া পেঁয়াজগুলোও প্রায় নষ্ট। যে আটার খামির ছিল, সেখানেও ছত্রাক পড়ে গেছে। আর রান্না করা মাংসের মধ্যে পাওয়া গেছে পশম।’
হেদায়েত বলেন, ক্যান্টিন ম্যানেজার মোবারক হোসেন প্রথমে কিছুই স্বীকার না করলেও জেরার মুখে পরে বলেন, খুদের চালের বস্তা দোকানি ভুল করে দিয়ে গেছে। পচা মাংসের প্যাকেটের বিষয়ে বলেন, ‘এটি কোনো শিক্ষার্থী ক্যান্টিনের ফ্রিজে রেখে গেছে।’
এরই মধ্যে হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একং হল প্রাধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে হল প্রাধ্যক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যান্টিন বন্ধ ঘোষণা করেন।
ছাত্রদের জেরার মুখে সব স্বীকার করলেও গণমাধ্যমের কাছে সব বেমালুম অস্বীকার করেন ক্যান্টিন মালিক মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোদিন পচা খাবার খাওয়াই না। ফ্রিজের মাংসগুলো একদিন আগের। একদিন আগের মাংস কি পচে যায় ‘
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যান্টিনে জায়গাস্বল্পতা। এক জায়গাতেই ধোয়ার কাজ, রান্নার কাজ বা রান্না করা ভাত রাখতে হয়। তাই এ রকম তো হবেই।’
খুদের চালের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দোকানদার ভুল করে এটা নিয়ে এসেছে। এটা তো খাওয়ানো যাবে না। তাই সেটা একপাশে রেখেছি। এর মধ্যে তারা এসে তাদের চোখে সেগুলো পড়েছে।’
হল প্রাধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘খাবারের যে অবস্থা দেখলাম, এগুলো তো খাওয়ানো যায় না। খাবারগুলো নষ্ট, পচা। মুরগির মাংসে পালক। এগুলো দেখে খাওয়ার তো রুচি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যানেজার পরিবর্তন করে দেব। দ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন ম্যানেজার দিয়ে ক্যান্টিন চালু করা হবে।’