জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) কাগজপত্র তছনছ করেছে দুর্বৃত্তরা। একই সঙ্গে ছাত্রীদের কমনরুমে ওয়াশরুমের বেসিনের কল চুরি হয়েছে। ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা শাখা) সাইদুর রহমান রনি এ ঘটনায় শনিবার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম।
এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শনিবার বিকেলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষে এ কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সভা করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচতলায় ছাত্রী কমনরুমের ওয়াশরুমের গ্রিল কাটা। ওয়াশরুমের সব কয়টি বেসিনের কল চুরি হয়ে গেছে। ওয়াশরুমে আইকিউএসি দপ্তরের কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়। এই সেলের সামনের করিডরে থাকা দুটি সিসি ক্যামেরার একটি ভেঙে খুলে ফেলা হয়, আরেকটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা হয়।
কর্মচারীরা জানান, ভাঙা সিসিটিভি ক্যামেরাটিও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি অফিসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গুচ্ছের পরীক্ষা থাকার কারণে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে সবাইকে বের করে দেয়া হয়। এরপর এই ঘটনাটি ঘটেছে।
‘এখন এ বিষয়ে আমাদের ভিসি স্যার কোতোয়ালি থানাকে তদন্তের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মো. নাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়েছে। আমিসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক আইন-উল হুদা বলেন, ‘এখানে চুরি করার মতো তেমন কিছু নেই। এ কাজটা কে বা কারা, কোন উদ্দেশ্য নিয়ে করল, তা-ই এখন তদন্ত করার বিষয়। আর আমাদের এ সেল থেকে নথিপত্র নিয়েও কারও কোনো লাভ হবে না।
‘সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি জায়গায় কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি তারাই এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
এদিকে শনিবার বিকেলে কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার শারমিলা ইসলাম ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনাস্থল থেকে তারা একটি রক্তাক্ত টি-শার্ট উদ্ধার করেন। তদন্ত চলা পর্যন্ত দপ্তরের জিনিসপত্রে হাত না দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে কাচের দরজাটি মেরামতের অনুমতি দেয়া হয়।