বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাবিতে ভর্তি পরীক্ষা: হোটেলে সিট সংকটে ধুঁকছেন অভিভাবকরা

  •    
  • ২০ জুলাই, ২০২২ ১৭:১২

সজিব বলেন, ‘দুই দিন ধরে কোথাও কোনো সিট খুঁজে পাচ্ছি না। এক আত্মীয় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে। সে জন্যই ২৫ তারিখের একটি হোটেলে সিট দরকার। কিন্তু রাজশাহীর কোথাও কোনো সিট নেই।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা জুলাইয়ের ২৫ তারিখ শুরু হবে। তিন দিন চলবে পরীক্ষা। এই সময়ে জেলায় আসবেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এই আগমন ঘিরে শহরের আবাসিক হোটেলগুলো এখন হাউসফুল। কোনো হোটেলেই মিলছে না সিট। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভর্তিচ্ছুদের অভিভাবকরা।

নগরীর কুমারপাড়া এলাকার সজিব জয়সোয়াল তার এক আত্মীয়র জন্য দুই দিন ধরে আবাসিক হোটেলে একটি সিট খুঁজছেন। শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেলেই গেছেন তিনি। কিন্তু কোথাও সিট পাওয়া যাচ্ছে না। সজিব বলেন, ‘দুই দিন ধরে কোথাও কোনো সিট খুঁজে পাচ্ছি না। এক আত্মীয় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে। সে জন্যই ২৫ তারিখের একটি হোটেলে সিট দরকার। কিন্তু রাজশাহীর কোথাও কোনো সিট নেই।’

একই অবস্থা আশরাফুল ইসলামের। ঢাকা থেকে তারও এক আত্মীয় আসবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে। তবে ২৬ তারিখের কোনো সিটই খুঁজে পাননি তিনি। বিভিন্ন এলাকায় তিনি খোঁজ নিয়েও আবাসিকে কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্যই এমন চাপ হয়েছে। কোনো আবাসিক হোটেলেই সিট নেই। ফলে আবাসন নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।’

শুধু আশরাফুল আর সজিবই নন, রাজশাহী শহরে এখন প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক ছুটে বেড়াচ্ছেন হোটেল কিংবা অন্য কোনো আবাসিক ব্যবস্থার জন্য।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৫ থেকে ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন চার শিফটে ১৮ হাজার করে মোট ৭২ হাজার ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী। এ বছর ৪ হাজার ২০টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদন জমা পড়ে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৮টি।

নগরীর উপশহর এলাকার একটি আবাসিক হোটেল ‘রাজশাহী ইন রেসিডেন্সিয়াল’। এই হোটেলেও নেই ওই সময়কার কোনো ফাঁকা সিটি। এক মাস আগেই অনেকেই বুকিং দিয়ে রেখেছে। হোটেলের ম্যানেজার শান্ত ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হোটেলে পরীক্ষার ওই কয়েক দিনের জন্য খুব চাপ আছে। কোনো রুম ফাঁকা নেই। আমার এখানে ৩২টি রুম আছে। বেশির ভাগ রুমই এক মাস আগে থেকেই বুকিং হয়ে আছে। ৮০ শতাংশ রুম ঈদের আগেই শেষ হয়ে গেছে। ২০ শতাংশ রুম ঈদের পরেই শেষ হয়েছে। এখন কোনো সিট ফাঁকা নেই।’

রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাসান কবির বলেন, ‘প্রতি বছরই এই সময়টায় এ ধরনের সংকট তৈরি হয়। আমরা হোটেল মালিকরা এই সময়টায় বিব্রত হই, বিড়ম্বনাতেও পড়ি। কারণ চেনাজানা অনেকেই আছেন, যারা হোটেলে সিট চান। কিন্তু দেয়ার উপায় থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহীতে সব মিলিয়ে ৫০টি আবাসিক হোটেল আছে। এগুলোতে আসনসংখ্যা মাত্র দুই হাজার। অথচ প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সিটের চাহিদা থাকে ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, ‘প্রতি বছরই ভর্তি পরীক্ষার সময় আবাসন নিয়ে বাড়তি চাপ হয়। এবারও হচ্ছে। আমাদের এ বিষয়ে বেশি কিছু করণীয় থাকে না। আমরা যে সুযোগটা দিই সেটা হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার এই সময়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কোনো ভর্তিচ্ছু থাকলে আমরা তাতে বাধা দিই না।

‘এখানকার আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, ছোট ভাই, ছোট বোন হলে থেকে পরীক্ষা দিতে পারে। অন্য সময় আবাসিক শিক্ষার্থী ছাড়া কারও হলে থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার সময় আমরা এটির ছাড় দিয়ে থাকি। এবারও সেই সুযোগ কাজে লাগাবেন অনেকেই।’

এ বিভাগের আরো খবর