বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়ায়’ যবিপ্রবি শিক্ষকের নামে মামলা

  •    
  • ৩ জুলাই, ২০২২ ১৮:০৯

গুঞ্জন উঠেছে, ‘বহিষ্কৃত ছাত্রের সঙ্গে বিরোধের ঘটনাকে পুঁজি করে এ শিক্ষককে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে। দুর্নীতি ও অনিয়ম চিহ্নিত করে ইতিপূর্বে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মিজানুর রহমান এ মামলা করেন। বিষয়টি অস্বীকার করে লাঞ্ছিত হওয়ায় মামলা করেছেন বলে দাবি মিজানুর রহমানের।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের নামে মামলা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

গুঞ্জন উঠেছে, ‘বহিষ্কৃত ছাত্রের সঙ্গে বিরোধের ঘটনাকে পুঁজি করে এ শিক্ষককে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অভিযোগ, দুর্নীতি ও অনিয়ম চিহ্নিত করে ইতিপূর্বে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মিজানুর রহমান এ মামলা করেন।

বিষয়টি অস্বীকার করে লাঞ্ছিত হওয়ায় মামলা করেছেন বলে দাবি মিজানুর রহমানের।

গত ২৮ জুন যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মারধরের অভিযোগে মামলা করেন মিজানুর রহমান।

যা বলা হয়েছে এজাহারে

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, রাজশাহীর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনারেটর সরবরাহ করে। ওই প্রতিষ্ঠানের ১৮ লাখ টাকার (বিল) প্রকল্পের বিপরীতে সিকিউরিটি বাবদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জামানত রাখা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওই সিকিউরিটির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র আজিজুল ইসলামকে দিতে চাপ দিচ্ছিলেন অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ।

টাকা দিতে না চাইলে তারা প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের ওপর ক্ষুব্ধ হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জুন শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে আজিজ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র প্রকৌশলী মিজানুরকে ডেকে ড. ইকবাল কবীর জাহিদের কাছে নিয়ে যান।

সেখানে গেলে ড. ইকবাল কবীর জাহিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের পশ্চিম পাশে সিঁড়ির নিচে গালিগালাজ করে মিজানুরের কানে থাপ্পড় মারেন।

পরে বহিষ্কার হওয়া ছাত্র আজিজও মিজানুরকে চড় মেরে লাঞ্ছিত করেন।

যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, ‘মামলার অভিযোগটি একেবারে ঠিক নয়। ঘটনার সময় মিজানুর ও আজিজের মধ্যকার কথা-কাটাকাটি চলছিল। বিরোধ দেখে ড. ইকবাল কবীর জাহিদ এগিয়ে গিয়ে তাদের নিবৃত করেন।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারির সাউন্ড সিস্টেমের দুর্নীতির বিষয়ে একটি তদন্ত হয়েছিল। তদন্তে প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন ইকবাল কবীর জাহিদ। সে কারণে দেখে নেয়ার জন্য মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে।’

ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ দাবি করেন, ঘটনা সাজানো বলেই মিজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অভিযোগ দিয়েছেন এবং আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন; তার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। একবার বলছেন, ২ নম্বর আসামি তাকে ডেকে নিয়ে গেছেন, আবার বলছেন বহিরাগত লোক এসে ডেকে নিয়ে গেছে। সময়েরও ভিন্নতা রয়েছে।

এ ছাড়া ঘটনার ২-৩ ঘণ্টা পর গিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মামলায় যাদের সাক্ষী করা হয়েছে, তারা কেউই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যবিপ্রবির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনিবুর রহমান জানান, ওই সময় তিনি ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলেন। তখন তিনি দেখেছেন, বহিষ্কৃত ছাত্র আজিজুলকে নিবৃত করে নিয়ে যাচ্ছেন ড. ইকবাল কবীর জাহিদ। এরপর তিনি সেখান থেকে চলে যান। ওই সময় ‘মিজানুর রহমানকে ড. ইকবাল কবীর মেরেছেন- এমন কোনো ঘটনা তিনি দেখেননি বা শোনেননি।’

যবিপ্রবির ফিজিওথেরাপি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. ফিরোজ কবীর জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যান। ইকবাল কবীর জাহিদ মিজানুর রহমানকে মেরেছেন এমন কথা তিনি ওই সময় শোনেননি।

ফিরোজ কবীর বলেন, ‘ড. ইকবাল কবীর জাহিদ একজন প্রথিতযশা শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণায়ও তিনি বরেণ্য। তিনি যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক। করোনাকালে এই জিনোম সেন্টারের অবদান সারা দেশের মানুষ জানেন। ফলে দুর্নীতি অনিয়ম ধরায় যদি এমন ষড়যন্ত্র ও হয়রানির শিকার হতে হয়, তা খুবই দুঃখজনক।’

অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘মারপিটের কোনো ঘটনার সঙ্গেই আমার ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই। তদন্ত করে অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়ায় আমাকে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিকার না হলে তো আর কেউ অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস পাবে না।’

মিজানুর রহমানের দাবি, তিনি মারপিটের শিকার হয়েছেন বলেই মামলা করেছেন। আর গ্যালারির সাউন্ড সিস্টেমের অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র প্রতিবাদে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে মানববন্ধন হয়েছে।

রোববার সকালে অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি এ মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সেলিনা আকতার, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনিবুর রহমান।

এ বিভাগের আরো খবর