নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিকের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ আগামী বছর থেকে প্রাক-প্রাথমিকের মেয়াদ হবে দুই বছর, এতদিন যা ছিল এক বছর মেয়াদি। এই দুই বছরের মধ্যে প্রথম বছর হবে প্রাক-প্রাথমিক ১ এবং দ্বিতীয় বছর প্রাক-প্রাথমিক ২।
বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় প্রাক-প্রাথমিকের মেয়াদ দুই বছর করার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়েছে; যা আগামী বছর থেকে কার্যকর হবে।
‘শিক্ষার্থীর বয়স চার বছর পূর্ণ হলে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি হবে। এ শ্রেণিতে দুই বছর অধ্যয়ন শেষে শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছর পূর্ণ হলে তারা প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে। এই দুই বছর প্রাক-প্রাথমিক ১ এবং দ্বিতীয় বছর প্রাক-প্রাথমিক ২ নামে পরিচিত হবে।’
ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিকের কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে। কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের খেলার ছলে শেখার বিষয়টিতে জোর দেয়া হয়েছে।’
দেশে প্রথমে ২০১০ সালে স্বল্প পরিসরে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু হয়। এরপর ২০১৪ সালে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু হয়।
দেশে এতদিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাস্তর চালু ছি,। যা ‘শিশু শ্রেণি’ নামে পরিচিত। ইংরেজি মাধ্যম ও কিন্ডারগার্টেনে প্লে, নার্সারি ও কেজি শ্রেণি প্রাক-প্রাথমিক স্তরের মধ্যে পড়ে।
জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনছে সরকার। নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে জোর দেয়া হয়েছে ধারাবাহিক মূল্যায়নে (শিখনকালীন)। অর্থাৎ মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে।
নতুন শিক্ষাক্রমে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির দুটি পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। একই সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষাও থাকবে না। আর নবম ও দশম শ্রেণিতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা নামে বিভাগও তুলে দেয়া হবে। সেটি ঠিক হবে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে।
২০২৩ সাল থেকে শুরু হবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন। ওই বছর প্রাথমিকে প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় আর মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালুর কথা ছিল। কিন্তু প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে না পারায় ওই বছর দ্বিতীয় শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু সম্ভব হবে না।
এরপর ২০২৪ সালে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি, ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।