নেত্রকোণার কলমাকান্দায় টানা ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে অন্তত ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চারটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢোকায় বন্ধ হয়ে গেছে পাঠদান। এ ছাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে বহু বিদ্যালয়ের মাঠ ও সংযোগ রাস্তা। এ কারণে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।
কলমাকান্দা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বরাতে জাহানারা খাতুন জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে সোমেশ্বরী, গণেশ্বরী, আত্রাখালী ও কংস নদী দিয়ে ধেয়ে আসছে ঢলের পানি। এ কারণে দক্ষিণ রানীগাও, কেশবপুর, বেনুয়া পূর্বপাড়া, আগবগজান, চৈতা, পোগলা, বাদে পোগলা, নাগডড়া, নানিয়া, কৃষ্ণপুর, চানকোনা, খলা, বড়খাপন, গোয়াতলা, ভাটিপাড়া, গঙ্গানগর ও বৈচাজুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৫টি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বহু বিদ্যালয়ের সংযোগ রাস্তা এবং আঙিনা ও মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়ায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে যেতে দিচ্ছেন না। এ ছাড়া চারটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢোকায় পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ চারটি বিদ্যালয় হচ্ছে দক্ষিণ রানীগাঁও, বেনুয়া পূর্বপাড়া, কেশবপুর ও নাগডরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে বেশ কিছু মাদ্রাসা এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থাও একই। সেগুলোও পানিবন্দি। সব মিলিয়ে পানিবন্দি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অন্তত ৫০ হবে।
সরেজমিন বুধবার সৌলজান, খলাসহ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু শিক্ষার্থী নৌকায় করে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ যাচ্ছে কোমর পানি মাড়িয়ে। কয়েকটি বিদ্যালয়ের উপস্থিতি ছিল ১০ জনেরও কম।
পানিবন্দির কারণেই উপস্থিতি এত কম, জানান বাদে পোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বিদ্যা মিয়া। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ের আঙিনায় ঢলের পানি আসায় অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় আসতে ভয় পাচ্ছে। অভিভাবকরা পাঠাচ্ছেন না। তবে যারা আসছে তাদের প্রতি আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, ‘পানিবন্দি হওয়ার বিষয়টি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বেশি অসুবিধা যেখানে হবে, সেখানে প্রয়োজনে পাঠদান বন্ধ রাখা হবে।’