বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই নেতার অনুসারীদের দ্বন্দ্বেই বন্ধ চুয়েট

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২২ ১৯:২১

ঘটনার শুরু শনিবার রাতে। সেই রাতে শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া রাত ৯টার বাসকে ঘিরে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় দুই পক্ষের। শহর থেকে ফিরে দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। পরদিন হয় সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষে আহত হন দুজন।

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির জেরেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের, আরেকটি সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের।

দুই পক্ষের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে নিউজবাংলা।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

ঘটনার শুরু শনিবার রাতে। সেই রাতে শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া রাত ৯টার বাসকে ঘিরে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় দুই পক্ষের। শহর থেকে ফিরে দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। পরদিন হয় সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষে আহত হন দুজন।

চুয়েট ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ইফফাত হক নিশান সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী। তিনি বলেন, ‘শুক্র-শনিবার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শুধু দুটো বাস চলাচল করে শহরে। শনিবার রাত ৯টার বাস শহর থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়তে বলেছিলেন নওফেল ভাইয়ের অনুসারী চুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন।

‘তখন সাধারণ শিক্ষার্থী দিয়ে বাস পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। বাসে ছাত্রীরাও ছিল। বাসে থাকা সবাই প্রতিবাদ করায় ঠিক সময়ে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনার রেশেই ওইদিন সারা রাত ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের ইট মারামারি চলে। পরদিনও সংঘর্ষ হয়। ওই সময় ত্রিপল ই ও মেকানিক্যালের দুজন শিক্ষার্থী আহত হন।’

নিশান বলেন, ‘আজ যেটা হয়েছে, কুদরত ই খোদা হল থেকে হলুদ হেলমেট পরা একদল ছেলে সকাল থেকে অস্ত্রসহ ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে। তারা প্রতিদিন সকালে শিক্ষার্থী ও টিচারদের নিয়ে আসতে যে বাসগুলো শহরে যায়, সেগুলো ক্যাম্পাস থেকে বের হতে দেয়নি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত চুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি আনাস মৃধা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডে নিহতদের স্মরণে শহরে একটা মিলাদের আয়োজন করেছিলাম আমরা। ওই সময় রাত ৯টার বাস শহর থেকে যাওয়ার সময় আমরা স্যারকে বলেছিলাম, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে আমরাও একসঙ্গে চলে যেতে পারব।

‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলে ঝামেলা করলে বাস চলে যায়। পরে স্যার আমাদের আরেকটি বাস ঠিক করে দিয়েছিলেন। এরপর ক্যাম্পাসে গেলে দেখি বহিরাগত কিছু ছেলে আমাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিচ্ছে না। দফায় দফায় আমাদের ওপর হামলা করছে।’

মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে শোডাউনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শোডাউনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ক্যাম্পাসে তো সিসিটিভি আছে, তদন্ত কমিটি করছে, কমিটি এটা দেখবে প্রয়োজনে।’

নাছির পক্ষের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে হেলমেট পরে অবস্থানকারীদের বহিরাগত দাবি করলেও তাদের নিজেদের ছাত্র দাবি করেছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ সকালে যারা বাস আটকে দিয়েছিল, তারাও আমাদেরই ছাত্র। তাদের নিজেদের ঝামেলা থেকে এটা করেছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবাইকে হল থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এখন সবাই বের হয়ে যাচ্ছে।’

নিজেদের ছাত্র হলে তাদের পরিচয় জানা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটা আসলে কী হয়েছে তা তদন্তে আমাদের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এটি তদন্ত করছে। তাদের পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সমীচীন হবে না, তাই আমরা আপাতত তাদের পরিচয় জানাতে চাচ্ছি না।’

কী বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

মঙ্গলবার দুপুরে ঈদের ছুটিসহ ১৪ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উপাচার্যের কার্যালয়ে বসা বিভাগীয় প্রধানদের বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্ত এসেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার ফারুক উজ-জামান চৌধুরী। বলেন, ‘সোমবারের ঝামেলাসহ সব মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু স্নাতক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। আমাদের স্নাতকোত্তরের কোনো শিক্ষার্থী হলে নেই এখন। তাই তাদের জন্য হল বন্ধ হলে খুব একটা সমস্যা হবে না। তাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।’

‘ঈদের ছুটিসহ সব মিলিয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সবকিছু্ বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ছাত্রীদের এক দিন সময় দেয়া হয়েছে, তারা বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়বে।’

এ বিভাগের আরো খবর