জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা দ্বিতল বাসটি দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই বেলা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। পরীক্ষামূলকভাবে বাস সেবাটি চালু হলেও কোনো প্রকার সমস্যা দেখা না দিলে স্থায়ীভাবেই নির্দিষ্ট রুটে এটি চলবে।
রোববার দুপুরে দ্বিতল বাসটি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ্-আল্-মাসুদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা কামাল, সহকারী প্রক্টররা, পরিবহন পুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে কেনা দ্বিতল বাসটি দুপুর দেড়টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে। বাসটি দয়াগঞ্জ, সায়েদাবাদ, খিলগাঁও রেলগেট, মালিবাগ, মৌঁচাক, বাংলামোটর, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং গুলিস্তান হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে।
এর আগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় বাসের ডাবল শিফটের জন্য দাবি, মানববন্ধন ও অনশন করেছে।
এদিকে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, এর মাধ্যমে যাদের ক্লাস আগে শেষ হয়, তাদের আর নিয়মিত বাস সার্ভিসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আবার যেসব শিক্ষার্থী পাঠাগারে পড়াশোনা করে তাদের জন্যও সুবিধা হবে।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল টুম্পা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে দুপুরেই ক্লাস শেষ হয়ে যায়। এ সময় বাস পাওয়ায় আমাদের জন্য বেশ সুবিধা হয়েছে।’
সমাজকর্ম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মেহরাব হোসেন অপি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হল না থাকায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থীই পুরান ঢাকায় অবস্থান করে। বিকেলে অনেকেই ঢাবির টিএসসির দিকে যায়। সন্ধ্যায় বাস যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা সহজেই ক্যাম্পাসে ফিরতে পারবে।’
চক্রাকার বাস চালুর বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ্-আল্-মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত সেয়া হয়। সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেই এ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।’
পরিবহন প্রশাসক আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কেননা অনেকের দুপুরের আগে ক্লাস শেষ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের কাজ থাকে, আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও সাংস্কৃতিক কোনো প্রোগ্রাম থাকে। আবার সন্ধ্যার পর এ সার্ভিসের কারণে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামগুলোর সঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী জড়িত তাদেরও সাংস্কৃতিক চর্চা করতে সুবিধা হবে। আশা করছি এ সার্ভিস চালুর হওয়ায় আমাদের শিক্ষার্থীরা সুবিধা পাবে।’
২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে পাওয়া ২টি মাইক্রোবাস এবং ৪টি মিনিবাস নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের যাত্রা হলেও এখন পুলে রয়েছে ৫৫টি গাড়ি। নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাউছিয়া, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জসহ দূরদূরান্ত থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসে শিক্ষার্থীদের পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে।