বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে রবির উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়

  •    
  • ১০ মে, ২০২২ ২৩:০৩

ভিডিওর শেষ অংশের দিকে রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহ আজম বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৪১ সালে। তখন ব্রিটিশ শাসন। সুতরাং তিনি যে ব্রিটিশ শাসন আমলে বাংলাদেশ নামক একটি অঞ্চলের চিন্তাটি করেছেন এবং এমন চিন্তা করেছেন যে দেশটি হবে অপরূপ। যেখানে নৈসর্গিক সৌন্দর্য এবং মানুষ-প্রকৃতির যে ভালোবাসা, সেই ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানবতার কবি রূপে সেটাই তো তিনি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) বলেছেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি, সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি’ এই কথাটি বলতে পারেন কে? কত বড় হৃদয় থাকলে... এবং তার প্রতি সুবিচার করে বাংলাদেশের শৃঙ্খল মুক্তির আন্দোলনের মহানায়ক বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার চেতনাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কাজে লাগিয়েছেন।’

সিরাজগঞ্জে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আজমের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।

কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা গানের অংশকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বলেছেন উপাচার্য।

গত ২৫ বৈশাখ রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি মিলনায়তনে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গত ৯ মে সোমবার রাতে উপাচার্য ড. শাহ আজমের বক্তব্যের দুটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সবার নজরে আসে।

ভিডিওর শেষ অংশের দিকে অধ্যাপক ড. শাহ আজম বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৪১ সালে। তখন ব্রিটিশ শাসন। সুতরাং তিনি যে ব্রিটিশ শাসন আমলে বাংলাদেশ নামক একটি অঞ্চলের চিন্তাটি করেছেন এবং এমন চিন্তা করেছেন যে দেশটি হবে অপরূপ। যেখানে নৈসর্গিক সৌন্দর্য এবং মানুষ-প্রকৃতির যে ভালোবাসা, সেই ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানবতার কবি রূপে সেটাই তো তিনি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) বলেছেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি, সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি’ এই কথাটি বলতে পারেন কে? কত বড় হৃদয় থাকলে... এবং তার প্রতি সুবিচার করে বাংলাদেশের শৃঙ্খল মুক্তির আন্দোলনের মহানায়ক বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার চেতনাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কাজে লাগিয়েছেন।’

ওই সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শামীম খান।

আরও ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের এমপি অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, সভাপতি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আজাদ রহমান, শাহজাদপুর পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদীসহ অনেকে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার বলেন, ‘প্রাজ্ঞ ব্যক্তিরা যদি ভুল বলেন তাহলে জাতি শিখবে কাদের কাছে থেকে?’

শাহজাদপুর শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও নাট্যকার কাজী শওকত বলেন, “কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা ‘ধন ধান্যে পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গানের প্রথম স্তবকের চতুর্থ লাইন এটি। এটা কিছুতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা না। রবি ভিসি অসাবধানতাবসত এটাকে রবীন্দ্রনাথের বলেছেন। এটা তার বলা ভুল হয়েছে।’

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, “এই উদ্বৃতি দ্বিজেন্দ্রগীতি অর্থাৎ কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা ‘ধন ধান্যে পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গানের অংশ। এটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নয়। তিনি হয়তো অসাবধানতাবসত এটা বলেছেন।”

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াতসিংহ শুভ বলেন, ‘উদ্বৃতিটি কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা গানের অংশ, রবীন্দ্রনাথের লেখা না।’

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের প্রভাষক রওশন আলমও একই মন্তব্য করেছেন।

রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, “মূলত ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী’ গানটির কথা ছিল বক্তব্যের মূল রেফারেন্স। তবে আলোচনার প্রবাহে ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি, সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি’ শব্দাবলি উচ্চারিত হয়েছে। কবিগুরুর ১৬১তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্যদানকালে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নামটি না বলা অনিচ্ছাকৃত। রাণী শব্দটা বিভ্রান্ত করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর