শিক্ষা আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে শিক্ষা আইনের খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে যা চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার কথা রয়েছে।
বুধবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) খালেদা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির নেতৃত্বে শিক্ষা আইন সংক্রান্ত কমিটির সভা রয়েছে। আশা করছি এ সভায় আমরা আইনটির খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেব। এর পর বিধি অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পরের কার্যক্রম শুরু হবে।’
এ দিকে শিক্ষা আইন তৈরির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। তারা আশা করছেন, এ আইন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে বিষয়টি শুনছি সরকার শিক্ষা আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে প্রত্যাশা করি আইনটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’
তবে শুধু আইন করলেই হবে না, এর যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি।
একই মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা আইন থাকা দরকার। এত দিন পরে হলেও এ উদ্যোগ নেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ। আশা করি আইনটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে।’
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন ‘শিক্ষা আইন’ চূড়ান্ত করার কাজ প্রায় শেষ। এ-সংক্রান্ত কমিটি আইনটি পর্যালোচনা করেছে। শিগগিরই এই আইনের খসড়া সংসদে উঠবে।
সেসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১০ সালে আমরা একটি জাতীয় শিক্ষানীতি পেয়েছিলাম। তা প্রস্তুত করা হয়েছিল সংবিধানের চার মূলনীতি ও ১৯৭৪ সালের কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের ওপর ভিত্তি করে।
‘শিক্ষার কাঠামো ঠিক রাখা, সমসাময়িক অসংগতি-অনিয়ম দূর করার জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা শিক্ষা আইন। এই আইন চূড়ান্ত করার কাজ শেষের দিকে। এ-সংক্রান্ত কমিটি আইনটির খসড়া পর্যালোচনা করেছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন শেষে আইনটি সংসদে পাঠানো হবে বলে সেসময় জানান মন্ত্রী।
করোনায় কয়েক দফা বন্ধের পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর গত ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।