বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি নির্ধারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয়সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২২’ প্রণয়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এরই মধ্যে এর খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। যা বেসরকারি স্কুল-কলেজসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে।
সোমবার এ-সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপত্বিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি বিদ্যালয়) ও নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ফৌজিয়া জাফরিন।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কত টাকা টিউশন ফি আদায় করা হবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। আদায়কৃত অর্থের জবাবদিহি তৈরিতে এ নীতিমালা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা এ-সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরি করেছি। আজ এ নীতিমালার খসড়া নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ খসড়া চূড়ান্ত করতে আরও দুটি সভার আয়োজন করব। এবার তা চূড়ান্ত করে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হবে।’
ফৌজিয়া জাফরিন আরও বলেন, নীতিমালা জারির পর কেউ সেটি অমান্য করলে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান অনুমোদন, পাঠদান স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি বাতিলের বিধান থাকবে নীতিমালায়।
কবে নাগাদ এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আশা করছি আগামী বছর থেকে এটির বাস্তবায়ন শুরু হবে।’
কী থাকতে পারে নীতিমালায়
বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, ‘এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন, ভর্তি ফি, সেশন ফি এবং বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণ ফিসহ যাবতীয় আয় ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এ নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিউশনসহ সব ধরনের ফি আদায় করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই নগদ অর্থ আদায় করতে পারবে না। এ ছাড়া আদায়কৃত অর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ তহবিলে জমা রাখতে হবে।’
আয়-ব্যয়ের হিসাবের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানের অডিট বাধ্যতামূলক করা হবে বলেও জানান তিনি।
করোনায় কয়েক দফা বন্ধের পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর গত ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।