বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মিলে চাঁদাবাজির অভিযোগ

  •    
  • ১৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:২৩

গাড়ির মালিক মেহেদি হাসান মুন্না বলেন, ‘আমরা ওই রোডে নতুন হওয়ায় কোনো উপায় না পেয়ে পুলিশের হাতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে চলে আসি। ফেরদৌস সেখানে উপস্থিত ছিল৷ তার কথা মতোই আমি টাকাটা পুলিশের হাতে দেই।’

রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় গাড়ি থামানোকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, টাকা নেয়ার কাজে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সহযোগিতা করেছেন শাহবাগ থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে চানখারপুলের নাভানা ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠা ছাত্রলীগ নেতার নাম ফেরদৌস আলম। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্যদিকে ফেরদৌসকে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠা পুলিশ কর্মকর্তার নাম নাসির উদ্দীন। তিনি শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই)।

গাড়ির মালিক মেহেদি হাসান মুন্নার অভিযোগ, ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাসির উদ্দীনের মাধ্যমেই চাঁদাবাজি করেছেন ফেরদৌস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১টার দিকে একটি মাইক্রো চানখারপুল-বুয়েটের রাস্তার বাম পাশের নাভানা ফিলিং স্টেশনের সামনে দাঁড়ায়। মাইক্রোচালক তার ডান পাশের দরজা খুলে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে আসা মোটর সাইকেলের গতিরোধ হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘মোটর সাইকেলে কোনো আঘাত লাগেনি। মোটরসাইকেলে একজনই ছিল আর মাইক্রোতে ছিল দুই জন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে এটি নিয়ে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। আমরা সেখানে পৌঁছালে ঘটনাস্থলে আগে থেকেই উপস্থিত মোটর সাইকেল আরোহীর এক সহযোগী আমাদের চলে যেতে বলে। তাই আমরা চলে আসি। এর বেশি কিছু জানিনা।’

গাড়ির মালিক মেহেদি হাসান মুন্না নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গাড়ি থামিয়ে নামতে যাব এমন সময় পেছন থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে ছাত্রলীগের ওই ছেলে এসে আমাদের ধমকাতে শুরু করে। আমার ড্রাইভারও তাকে একটা গালি দেয়। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত মোটরসাইকেল আরোহীর এক সহযোগী বলে, দশ-বিশ হাজার টাকা দেন। সে রেগে আছে। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাক। আর নাহলে আমি সামাল দিতে পারব না। বুঝেন ত, পোলাপানের কিছু খরচ আছে।’

তিনি বলেন, ‘তাদের কথা শুনে বুঝতে পারি এটি পূর্ব পরিকল্পিত। তারা একটা সিন্ডিকেট। আমি ৯৯৯ নাইনে ফোন দিলে পুলিশ আসে। তবে বাইকওয়ালা ছাত্রলীগের পদে থাকায় পুলিশও তাদের সরাসরি কিছু বলছিল না। উল্টো পুলিশ আমাদের বলে, আপনারা যদি বিষয়টা এখানেই মিটিয়ে ফেলতে চান তাহলে আমি চলে যাব। আর নাহলে থানায় চলেন।

‘আমরা ওই রোডে নতুন হওয়ায় কোনো উপায় না পেয়ে পুলিশের হাতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে চলে আসি। ফেরদৌস সেখানে উপস্থিত ছিল৷ তার কথা মতোই আমি টাকাটা পুলিশের হাতে দেই।’

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস আলম বলেন, ‘তারা ভুল জায়গায় গাড়ি থামিয়ে নামতে চাইলে আমি হঠাৎ ব্রেক করায় গাড়িসহ পড়ে যাওয়ার উপক্রম হই। এ নিয়ে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হলেও আমি চলে যাওয়া শুরু করি। কিন্তু গাড়ির মালিক পেছন থেকে হঠাৎ আমার কলার ধরে বসেন।

‘এরপর আমি রেগে যাই। এ নিয়ে আরও কিছুক্ষণ আমাদের মাঝে বাগ-বিতণ্ডা হয়। এর মধ্যে পুলিশও চলে আসে। তারপর ছাত্রলীগের কয়েকজন বড় ভাই থেকে ফোন আসায় আমি শান্ত হই৷ কার মালিক আমাকে স্যরি বলায় আমি সেখান থেকে চলে আসি।’

চাঁদা নেয়ার বিষয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘এসবের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কোনো কথাই হয়নি। তবে শুনেছি নাভানার সামনের ঘটনা শেষ করে বকশিবাজারের সামনে যায় কার মালিক এবং পুলিশ। সেখানেই কার মালিক পুলিশকে পাঁচ হাজার টাকা দিছে।’

অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক নাসির উদ্দীন বলেন, ‘এ ঘটনায় দুজনেরই দোষ আছে। দুই পক্ষকে বুঝিয়ে নাভানার সামনেই মীমাংসা করে দেয়া হয়৷ কোনো টাকার বিনিময় হয়নি।’

ফেরদৌস আলমের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির বলেন, ‘প্রশ্নই উঠে না। ঘটনাটা ঘটেছে তাদের দুই জনের মধ্যে। আমি ৯৯৯ নাইনের ফোন পেয়ে এসেছি। টাকা বিনিময় হলে তাদের মাঝে হওয়ার কথা। আমাকে টাকা দিবে কেন? তিনি (ফেরদৌস) কোন উদ্দেশ্যে এ কথা বলছেন আমি বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘এরকম একটা অভিযোগ শুনেছি। আমরা ভিক্টিমের সাথে কথা বলেছি। তবে ভিক্টিম এ বিষয়ে তার কোন অভিযোগ নেই বলছেন। তারপরও আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করবো। এতে উপপরিদর্শক নাসিরের কোন সংশ্লিষ্টতা পেলে আমাদের বিভাগের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।’

এছাড়া এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিভাগের আরো খবর