জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের নিয়োগ কার্যক্রম ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মক্কেল ড. মো. শাহেদুর রশিদ ওই বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষক। আইন অনুযায়ী পরবর্তী সভাপতি পদ তার প্রাপ্য। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ‘ওভারটেক’ করে জুনিয়র একজনকে ওই বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জে রিট দায়ের করা হয়। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে ৩০ দিনের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ড. নজরুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে গত ১৮ জুলাই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল হাসানের নিয়োগের মেয়াদ ২৫ জুলাই শেষ হবে। এ বিভাগের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শাহেদুর রশিদের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত চলমান। এ অবস্থায় তৎপরবর্তী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলামকে ২৬ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো। তিনি প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সুবিধাদি ভোগ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান ড. মো. শাহেদুর রশিদ। তারই সূত্রে ৩০ দিনের স্থগিত আদেশ এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের এক শিক্ষার্থী ২০১৮ সালের ৫ জুলাই যৌন হয়রানিমূলক আচরণের জন্য একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহেদুর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। উপাচার্য বরাবর দেয়া এ লিখিত অভিযোগ তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল।
এ বিষয়ে তার আইনজীবী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল বলেন, ‘আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তার তদন্ত চলমান আছে তিন বছর ২৫ দিন ধরে। যৌন হয়রানি আইনে বলা আছে, এ অভিযোগের তদন্ত ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর সর্বোচ্চ ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে। এ ক্ষেত্রে তদন্ত দীর্ঘায়িত করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যা আমরা আদালতেও বলেছি।’
তদন্তে বিলম্বের বিষয়ে জানতে চাইলে জাবির যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে তদন্ত আপাতত বন্ধ আছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা কোনো কাজ করতে পারছি না। তদন্তের কাজটি যেহেতু ভার্চুয়াল করা যায় না, সে জন্য দেরি হচ্ছে। এ ছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্য বারবার পরিবর্তন আরেকটি কারণ। তদন্ত কমিটির একজন পুরুষ সদস্য পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন সদস্য নিয়োগ দিতে বিলম্ব হয়েছে।’