ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিন্নমূল যেসব শিশুরা ঘুরে বেড়ায়, কোরবানির দিন বঞ্চিত হবে না তারাও। তাদের জন্য দুটি ছাগল কিনেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের নেতা তানভীর হাসান সৈকত।
ঈদের আগের দিন পশু দুটি পেয়ে ব্যাপক আনন্দ করেছে পরিবারের ভালোবাসা, মায়া-মমতা থেকে বঞ্চিত এসব শিশুরা।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় শিশুদের আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়।
বুধবার সকালে ছাগল দুইটি কোরবানি করা হবে। এরপর রান্না করে খাওয়ানো হবে ছিন্নমূল মানুষদের।
তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘ছোটবেলায় কুরবানির পশু নিয়ে একটা উৎসব উৎসব ভাব থাকত। উৎসাহ নিয়ে বসে থাকতাম কখন হাট থেকে গরুটাকে নিয়ে আসবে। আনার পর নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাদিন শুধু এটার আশেপাশে ঘুরঘুর করতাম। আদর করতাম, খাবার খাওয়াতে চাইতাম।
‘কিন্তু টিএসসির শিশুরা কখনো এই আনন্দটা পায় না। কোরবানি করার সুযোগ তাদের নেই। তাদের কথা ভেবে গরু না পারলেও সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা দুটি খাসি কিনেছি যেন এ বাচ্চাগুলো আনন্দ উপভোগ করতে পারে।’
ছাগল দুটিকে ঘিরে শিশুদের আনন্দ দেখে মন ভরে গেছে সৈকতের। তিনি বলেন, ‘তারা একে অপরকে ডেকে আনছে ছাগল দেখার জন্য। আনন্দ আর প্রাপ্তির আবেগের তীব্রতায় ইতিমধ্যে মিছিলও করেছে তারা। কার আগে কে এদেরকে পাতা খাওয়াবে সেই প্রতিযোগিতা চলছে। তাদের এই নির্মল উচ্ছ্বাস আর হৈচৈ দেখে সত্যিকার অর্থে 'ঈদ ঈদ' মনে হচ্ছে আমাদের।’
বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াতে সৈকতের এই উদ্যোগ এবারই প্রথম নয়। গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরুতে দেশে সাধারণ ছুটি শুরু হলে ২৫ মার্চ থেকে টানা ১২১ দিন টিএসসি এলাকায় ভাসমান মানুষের মধ্যে খাবার বিলিয়েছেন তিনি।
এমন মানবিক কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন সৈকত। জাতিসংঘ থেকে দেয়া হয়েছে ‘রিয়েল লাইফ হিরোর’ মর্যাদা।
সর্বশেষ ছিন্নমূল মানুষদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বসিয়েছেন করোনার টিকা রেজিস্ট্রেশন বুথও স্থাপন করেছেন তিনি । তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী সহায়তাও তুলে দিচ্ছেন সৈকত ও তার বন্ধুরা।
সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের মাস্টার্সে পড়ছেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সদস্য।