বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢেলে সাজানো হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা

  •    
  • ২০ জুলাই, ২০২১ ১০:৩৯

সম্প্রতি এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সর্বাধিক দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা যায়, এমন খাতগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং এবং আগামী দিনে কতজন দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা যায়, তার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে হবে।

দেশে কর্মসংস্থান ও দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে কারিগরি শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কারিগরি শিক্ষার কারিকুলাম পরিবর্তন ও পরিমার্জনসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগকে ইতিবাচক বলছেন শিক্ষাবিদরা।

সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষাসংক্রান্ত একটি নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এর পরই বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে। বৈঠকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একাধিক কমিটিও গঠন করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, যুগোপযোগী কারিকুলাম তৈরি করতে গত ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, বাংলাদেশ রপ্তানি অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়, সর্বাধিক দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা যায়, এমন খাতগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং আগামী দিনে কতজন দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা যায়, তার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তার মধ্যে কারিকুলাম অন্যতম। এ কারিকুলামকে যুগোপযোগী করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনা করা হচ্ছে কারিগরি শিক্ষায় ২০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির। শিক্ষার্থীদের বেসিক ডিগ্রি দেয়ার পাশাপাশি দক্ষতার ওপরও একটি ডিগ্রি দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থী বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বড় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও সরকারের নতুন নীতিতে বড় গুরুত্ব পাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহসিন বলেন, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কারিগরি শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কারিগরিতে অনেক বিভাগ রয়েছে, যেগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি সাংঘর্ষিক। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ ছাড়া, বেসিক ডিগ্রি পাওয়া শিক্ষার্থীদেরও কর্মমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পাওয়ার পর আমরা ১২ সদস্যের একটি কমিটি করেছি। এ কমিটিতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন চেম্বার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আমরা তাদের কর্মী-সংক্রান্ত চাহিদাগুলো জানার চেষ্টা করছি। সে অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করা হবে।’

বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।

তিনি বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে এখনও এটা অবহেলিত। জাপান, জার্মানি কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছিল বলেই আজ তারা এত উন্নত। যারা বিসিএস পাস করছেন, তারাও এখন নিজেদের বিষয়ে চাকরি করছেন না। সাধারণ শিক্ষায় অনেক ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে, কিন্তু তারা তাদের অর্জিত বিদ্যা যথাযথ জায়গায় প্রয়োগ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

‘আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষার ব্যবহার খুবই কম। আমাদের যেসব শ্রমিক বিদেশ যায়, তাদের যদি আমরা কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠাতে পারতাম, তাহলে তারা দক্ষ শ্রমিক হিসেবে অনেক বেশি বেতন ও মর্যাদা পেত।’

তিনি আরও বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষায় জোর দেয়া হলে দেশের অনেক বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানও হবে। এত দিন পর যে সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে, এ জন্য সাধুবাদ জানাই।’

এ বিভাগের আরো খবর