বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘দুর্নীতি-জঙ্গিবাদের কবল’ থেকে নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি

  •    
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ১২:১৪

ড. সাগর সামস্ বলেন, দুই ট্রাস্ট্রি আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম শুধু লাগামহীন দুর্নীতি করেই থেমে থাকেননি; নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকেও জঙ্গি তৈরির কারখানায় পরিণত করেছেন। রাষ্ট্রের স্বার্থেই তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস্।

এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য এম এ কাশেমের নানা অনিয়মের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেন। এরপর এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৮ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব পুনঃনিরীক্ষা করে প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা।

তার দাবি, মূলত রাষ্ট্রীয় স্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়েই মানবাধিকারকর্মী কর্মী হিসেবে গণমাধ্যমের কাছে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেছেন।

ড. সুফী সাগর সামস্ জানান, সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করা অভিযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন এরই মধ্যে মধ্যে দুদকে জমা দেয়া হয়েছে। শিগগিরই এই চিঠিটির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হবে।

লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি সাগর সামস্ এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় ছাপা হওয়া সংবাদের কপিও সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পৃক্ততা সংক্রান্ত বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।

লিখিত বক্তব্যে সুফী সাগর দাবি করেন, ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদে কয়েকজন ব্যক্তির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তার ভাষ্য, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু এই মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য এম এ কাশেম বেআইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা উভয়ে যোগসাজশ করে আত্মসাৎ করেছেন, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দীন ও এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয় মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে। ছবি: নিউজবাংলা

ড. সাগর সামস্ বলেন, দুই ট্রাস্ট্রি আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম শুধু লাগামহীন দুর্নীতি করেই থেমে থাকেননি; নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকেও জঙ্গি তৈরির কারখানায় পরিণত করেছেন। রাষ্ট্রের স্বার্থেই তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

ওই সময় সাগর এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশালয় হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ট্রাস্টি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের বাইরে ১০টি সেকশন চালু ও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে বিশাল অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করেন এবং এই টাকা বিভিন্নভাবে আত্মসাৎ করেন তারা।

এ ছাড়াও ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহানসহ আজিম-কাশেম পরস্পর যোগসাজশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে ১১৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়।

আজিম উদ্দিন ও এমএ কাশেমের বিরুদ্ধে আরও বলা হয়, তারা পরিবারের সদস্যসহ বিদেশ ভ্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় কোটি টাকা অপব্যয়, সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গাড়িচালক ও জ্বালানি বাবদ ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পাশাপাশি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিক্ষার্থীদের দেয়া টিউশন ফির অর্থ থেকে ভাতা বাবদ প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথেরর জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার তথ্য উপস্থাপন করে এমএ কাশেম ও আজিম উদ্দিনকে দায়ী করা হয়। দেশে ঘটে যাওয়া নানা জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরা হয়।

এ সময় দুই ট্রাস্টির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে দেখার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ সাজানোর দাবি জানানো হয়।

দুই ট্রাস্টির বক্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত এসব অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এম এ কাশেমের সঙ্গে।

তারা প্রায় অভিন্নভাবে বলেছেন, এসব সব কেচ্ছা-কাহিনি অনেক পুরোনো। এসব পুরোনো কাসুন্দি আর কত ঘাটবে। দুষ্ট লোকেরা তাদের বিরুদ্ধে এসব করছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।

তাদের দাবি, রাষ্ট্র, সরকার ও সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের কোটি কোটি আর্থিক সহযোগিতা, দান ও অনুদান রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর