সব মাদ্রাসার ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতদিন শুধু দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার তথ্য ছিল সরকারের কাছে। এবার কওমি, নূরানী, দীনিয়া হাফেজিয়া, ফোরকানিয়া, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ৬ ধরনের মাদ্রাসা ও শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (ব্যানবেইস)।
এ বিষয়ে গত ২১ জুন আদেশ জারি করে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
নির্দেশনায় বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে কওমি, নূরানী, দীনিয়া, হাফেজিয়া, ফোরকানিয়া, ইবতেদায়িসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেইজ তৈরি করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুারো (ব্যানবেইস) শিক্ষা সেক্টরের জাতীয় ডাটা ওয়্যারহাউসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি এবং প্রতিনিয়ত হালনাগাদকরণের কাজ সম্পাদন করে বলেও বলা হয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কাজেই ব্যানবেইস থেকে কওমি, নূরানী, দীনিয়া, হাফেজিয়া, ফোরকানিয়া, ইবতেদায়িসহ সকল ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের একটি ডাটাবেইজ প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুারো (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা চিঠি পেয়েছি। আশা করছি অফিসিয়াল প্রক্রিয়া শেষ করে শিগগির কাজ শুরু করা হবে।’
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার অংশ হিসেবেই আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মাদ্রাসার নিবন্ধন দেয়া, আলাদা কওমি বোর্ড গঠন করতে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য জানা প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যানবেইসকে বলা হয়েছে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুারোর কাছে শুধু দাখিল, আলিম, ফাজিল, কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর তথ্য আছে।
২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই চার ধরনের মাদ্রাসার সংখ্যা ৯ হাজার ৩০৫টি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ লাখ ৫৩ হাজার ১৩৩ জন।
কওমি, নুরানী, দীনিয়া, হাফেজিয়া, ফোরকানিয়া, ইবতেদায়ির কোনো তথ্য ব্যানবেইসের কাছে নেই।
এর আগে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে ও কওমি শিক্ষা বোর্ড গঠনে একটি কমিটি গঠন করে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
২১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এক অফিস আদেশে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক মো. আব্দুস সেলিমকে করা হয়েছে সদস্যসচিব।
১৫ সদস্যের ওই কমিটিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, জননিরাপত্তাবিষয়ক বিভাগের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আছেন।
এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসার ছয় বোর্ডের চেয়ারম্যানদেরও পদাধিকার বলে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তারা হলেন বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান, গওহরডাঙ্গা বোর্ডের মুফতি রুহুল আমীন, আঞ্জুমানে ইত্তিহাদ বোর্ডের মাওলানা আবদুল হালিম বোখারি, সিলেটের আযাদ দ্বীনি বোর্ডের মাওলানা জিয়াউদ্দিন, তানযীমুল মাদারিসের মুফতি আরশাদ রহমানী ও জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।