করোনাভাইরাস সংক্রমণে চতুর্থবারের মতো ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীরা।
আগামী মাসের মধ্যেই স্থগিত পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করতে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রোববার দুপুরে তাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিনের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন।
ডিন অফিস থেকে বলা হয়, ‘স্যার অফিসে নেই’।
মূলত মেডিসিন অনুষদ থেকেই অধিভুক্ত মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত মেডিক্যাল কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা গত বছরের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল৷
তবে করোনা সংক্রমণের কারণে সেটি স্থগিত করে এই বছরের ৪ এপ্রিল পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়। লকডাউনের কারণে সেটিও স্থগিত হয়। নতুন তারিখ দেয়া হয় ৩০ মে। সেই তারিখও পরিবর্তন করে বলা হয় ২৯ জুন থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।
সোমবার থেকে শাটডাউনের ঘোষণা আসলে গতকাল শনিবার দুপুরে এই তারিখও স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল অনুষদ। চার দফায় পরীক্ষা স্থগিতে ক্ষুব্ধ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনা ও লকডাউনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পরীক্ষা বারবার স্থগিত করলেও রাজশাহী এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অধীনে থাকা আমাদের সহপাঠীদের পরীক্ষা নিয়ে নিয়েছে। তারা অলরেডি অনেক মেডিক্যালে ইন্টার্ন করাও শুরু করেছেন। এতে তারা পিছিয়ে গেছেন।
এটিকে বৈষম্য দাবি করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নর্দান আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, ‘আমাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমাদের ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা চারবার রুটিন দিয়ে স্থগিত করায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
‘আমাদের সঙ্গে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গুলিয়ে ফেললে হবে না। আমরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছি। আমরা জানি কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়। এই পরীক্ষায় পাস করলেই করোনা মহামারিতে সেবা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য জরুরি। মেডিক্যাল অনুষদের ডিন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আমাদের আকুল অনুরোধ, কোরবানি ঈদের আগেই স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়া হোক৷’
মুগদা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী অনাবিল বলেন, ‘আমরা যেকোনো মূল্যে কোরবানির ঈদের আগে আমাদের পরীক্ষা শুরু করতে চাই। আমাদের অনেক সহপাঠী পরীক্ষা দিয়ে ডাক্তার হয়ে গেলেও আমরা একটি পরীক্ষাও দিতে পারিনি। আমাদের পরীক্ষা নিয়ে নেয়া হলে আমরা পাস করে এখন করোনা রোগীদের সেবা দিতে পারতাম। দেশকে সেবা দিতে পারতাম।’
সাবিকুন নাহার মৌ বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের চিকিৎসক ও করোনাযোদ্ধা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রায় সব মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্ন সংকট দেখা দিয়েছে। এই ইন্টার্ন সংকট নিরসন শুধুমাত্র আমাদের পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমেই সম্ভব।
‘নতুবা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার সংকটময় হবে। এমতাবস্থায় আমরা ভিন্ন পদ্ধতিতে অথবা সংক্ষিপ্ত আকারে, পেশাগত পরীক্ষা দিতে চাই।’